৫০ লাখ টিকা আসছে আজ
আরিফ সাওন
🕐 ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২১
সব ঠিক থাকলে আজই দেশে আসতে পারে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বেক্সিমকোর মাধ্যমে কেনা টিকার ৫০ লাখের প্রথম চালান। দেশে আসার পর বিমানবন্দর থেকে টিকা নিয়ে যাওয়া হবে বেক্সিমকোর সেন্টারে। সেখানে রেখে দুদিন পর ২৭ ফেব্রুয়ারি সরকারকে টিকা হস্তান্তর করতে পারে বেক্সিমকো ফার্মসিটিক্যাল লিমিটেড।
এদিকে ২৭ তারিখেই একজন নার্সের দেহে প্রয়োগের মধ্য দিয়ে দেশে প্রাথমিকভাবে শুরু হচ্ছে টিকা কার্যক্রম। এদিন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার আরও ২৪ জনকে টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে। পরদিন ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর আরও ৫টি হাসপাতালে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা। টিকা দেওয়ার পর এদের ছয় থেকে সাত দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দিলে, বড় ধরনের কোনো সমস্যা না হলে, সব ঠিকঠাক থাকলে ৮ ফেব্রুয়ারির আগেই সারা দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত ৮ ফেব্রুয়ারিকেই তারিখ নির্ধারণ করে সেভাবেই পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি না কি ৮ ফেব্রুয়ারির আগেই শুরু হবে তা নির্ভর করছে ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি টিকা গ্রহণকারীদের শারীরিক অবস্থা কি হয় তার ওপর।
গত ১১ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ভবনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানিয়েছিলেন, বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ক্রয় করা ৬ কোটি ৮০ লাখ টিকার প্রথম চালান ২১ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে আসবে। তখন প্রথম চালানে ৫০ লাখ টিকা এবং পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে বাকি টিকা আসবে বলে জানান।
গতকাল রোববার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র (লাইন ডিরেক্টর, এনসিডিসি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন খোলা কাগজকে বলেন, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, ২৫ তারিখ আসবে বলে তারা আশা করছেন। ফ্লাইট শিডিউল এখনো পাওয়া যায়নি (২৪ জানুয়ারি বিকাল ৪টা পর্যন্ত)।
এদিকে গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক প্রেস বিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ২৫ জানুয়ারি চুক্তি অনুযায়ী আরও ৫০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে আসবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র (লাইন ডিরেক্টর, এনসিডিসি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, ২৫ জানুয়ারি টিকা এলেও সরকারের কাছে হস্তান্তর হবে দুদিন পর। বেক্সিমকো নিয়ে এসে তাদের সেন্টারে রাখবে। আমাদের হাতে আসবে ২৭ তারিখের দিকে। এদিনই অর্থাৎ ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলায় একজন নার্সকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। পরদিন ২৮ তারিখ রাজধানীর ৫টি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে।
৮ ফেব্রুয়ারিই সারা দেশে টিকা প্রয়োগ শুরু হবে কি না-জানতে চাইলে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, এখন পর্যন্ত তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত আছে। তবে তারিখ এগোতে পারে। ২৮ তারিখ দেওয়ার পর ছয়-সাত দিন অবজারভেশনের থাকবে। এরা কেমন আছে। প্রোগ্রামটা কেমন চলছে। এগুলোর ওপর নির্ভর করবে। ভালো চললে, হয়তো আগেও শুরু করে দিতে পারে। তবে এখনো তা ঠিক হয়নি; ৮ তারিখ না কি তার আগে।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, উপহারের ২০ লাখ এবং ক্রয় করা ৫০ লাখ মিলে ৭০ লাখ টিকা দেশে রাখা ও বিতরণের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়েছে।
২৭ জানুয়ারি প্রাথমিকভাবে যে টিকা প্রয়োগ শুরু হবে তা ক্রয় করা টিকা দিয়ে নয়; ভারত থেকে উপহার পাওয়া টিকা দিয়ে। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ভারত বাংলাদেশকে ২০ লাখ টিকা উপহার পাঠায়। আগে পরিকল্পনা ছিল প্রথম মাসে ৫০ লাখ লোককে টিকা দেওয়ার। কিন্তু ভারতের উপহার পাওয়ার পর প্রথম মাসে ৬০ লাখ লোককে টিকা প্রয়োগ সম্ভব হবে। ২৬ জানুয়ারি থেকে করোনা প্রতিরোধের টিকা গ্রহণকারীদের অ্যাপসে রেজিস্ট্রেশনে কথা ছিল। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য তথ্য ইউনিটের প্রধান ডা. শাহ আলী আকবর আশরাফী বলেন, ২৬ জানুয়ারি থেকে রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে কিনা তা ২৫ জানুয়ারি নিশ্চিত করে বলা যাবে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র (লাইন ডিরেক্টর, এনসিডিসি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, ‘২৬ বা ২৭ তারিখের কথা বলা হচ্ছে। ২৬ জানুয়ারির কথা ছিল। একটু এদিক-সেদিক হতে পারে। হয়তো ২৬ বা ২৭ জানুয়ারি রেজিস্ট্রেশন শুর হবে।’
প্রাথমিকভাবে ২৭ এবং ২৮ জানুয়ারি কারা টিকা পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে যাদের দেওয়া হচ্ছে ওটা সেম্বলিক। তাই ওখানে স্বাস্থ্যকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, পুলিশ, সেনাবাহিনী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ থাকবেন। এছাড়া ২৮ তারিখ ৫ হাসপাতালে সবাইকে দেওয়া হবে না। সিলেকশন করে আনুমানিক যে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তারা সম্মুখ সারির স্বাস্থ্যকর্মী। পাঁচ হাসপাতালে ফিগারটা মোট ৪০০ থেকে ৫০০ জনের মধ্যে।