ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হচ্ছে দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:১২ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ০২, ২০২০

চাহিদা অনুযায়ী উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করার জন্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশকে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন কেবল স্থাপন’ শীর্ষক এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)। 

একনেক সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এসে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পকে সময়োপযোগী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।’ এদিকে, বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে চার দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে একনেক সভায় জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব, ভারতের সাত রাজ্য, নেপাল ও ভুটান। ভুটান ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, আগ্রহের কথা জানিয়েছে সৌদি আরব ও নেপাল। এতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৩০১ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। বাকি ৩৯২ কোটি টাকার জোগান দেবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কোম্পানি বিএসসিসিএল। চলতি বছরের অক্টোবরে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত এসএমডাব্লিউ-৬ সাবমেরিন কেবল ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূমধ্যসাগর অবধি বিস্তৃত হবে। এর কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিসর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারে কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। বিএসসিসিএল ও আইটিসির ব্যান্ডউইথ ব্যবহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত কয়েক বছরে দেশে ব্যান্ডউইথ ব্যবহার বৃদ্ধির হার প্রায় ৭০ শতাংশ। এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও কয়েক বছর অব্যাহত থাকতে পারে বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। ২০২১ সাল নাগাদ দেশে ৫জি সেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সেক্ষেত্রে ব্যান্ডউইথের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে।

২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রথম সাবমেরিন কেবল এসএমডব্লিউ-৪ এবং ২০১৭ সালে দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল এসএমডব্লিউ-৫-এ যুক্ত হয়। আলাদা দুটি কনস্টোমিয়ামের মাধ্যমে এই সাবমেরিন কেবল দুটি পরিচালিত হচ্ছে। প্রথম সাবমেরিন কেবল এসএমডব্লিউ-৪-এর ২০ বছরের আয়ুষ্কাল আগামী ২০২৫ সালে শেষ হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে এ কেবল ১৫ বছরের পুরনো হয়ে যাওয়ায় সেবা বিঘিœত হওয়ার হার বেশি। তাছাড়া তুলনামূলকভাবে পুরনো প্রযুক্তির কারণে এই কেবলের মাধ্যমে যথেষ্ট দ্রুতগতির সেবা পাওয়া যাচ্ছে না বলে এর সংযোগ নেওয়ার আগ্রহ কম। এসব বিষয় বিবেচনা করেই বাংলাদেশকে তৃতীয় সাবমেরিন কেবলে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে প্রকল্প প্রস্তাবে জানানো হয়েছে।

 
Electronic Paper