ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ব্যঙ্গচিত্র প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইলে ফ্রান্সকে বয়কের হুমকি চরমোনাই পীরের

খোলাকাগজ ডেস্ক
🕐 ৯:০৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২০

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম  বলেছেন, ফ্রান্স সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে পুলিশ পাহারায় মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করে মুসলিম উম্মাহ’র কলিজায় আঘাত করেছে। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যাক্রো ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে মুসলিম বিদ্বেষী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। অবিলম্বে ব্যঙ্গচিত্র প্রত্যাহার করে মুসলমানদের কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করতে হবে। অন্যথায় বিশ্বমুসলিম নেতৃবৃন্দের ঘোষণা ফ্রান্সকে বয়কট এবং ফ্যান্সের পণ্য বর্জন কর্মসূচির সাথে একাত্ততা ঘোষণা করেন তিনি।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী অশান্তি দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নিয়ে তা প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় জাতিসংঘ ব্যর্থ হয়েছে। তিনি জাতিসংঘ এবং ওআইসিকে ফ্র্যান্সের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশ সরকারকে সংসদে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপনের জন্য দাবি জানান। মুসলমানদের পক্ষে অবস্থান নিতে ব্যর্থ হলে দেশবাসী সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ফ্রান্সে প্রকাশ্যে রাসূল (সা.) এর ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশের প্রতিবাদে ঢাকাস্থ ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও পূর্ব জমায়েতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত জমায়েতে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, মাওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দিন, মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, জিএম রুহুল আমিন, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম প্রমুখ। কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ূম ও সহ- প্রচার সম্পাদক মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাকীর পরিচালনায় জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়।

বেলা ১২টায় ফ্রান্স দূতাবাস অভিমুখে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে পল্টন মোড়, বিজয়নগর, কাকরাইল নাইট এ্যাঙ্গেল হয়ে শান্তিনগর পৌঁছলে পুলিশ কাঁটাতারের ব্যারিকেট দিয়ে মিছিলের গতি রোধ করে। এসময় নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে পীর সাহেব চরমোনাই সকলকে শান্ত করেন।

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম  ফ্রান্সে নবী (সা.)  এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল, ৩০ অক্টোবর সারাদেশের প্রতিটি মসজিদ থেকে ইমাম ও খতীবের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল এবং ১৩ নভেম্বর ধোলাইপাড় মূর্তি বিরোধী সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সারাদেশের ইমাম ও খতীবদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ পালনের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, মুসলমানরা তাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) কে তাদের প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। মহানবীর অপমান মুসলমানরা সহ্য করবে না। ফ্রান্স সরকার নবীর বিরুদ্ধে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের মাধ্যমে তাদের হিংসাত্মক মনোভাব প্রকাশ করেছে। ফ্রান্স সরকার নবীর বিরুদ্ধে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের মাধ্যমে বিশ্বমুসলিমকে উস্কে দিয়ে বিশ্বব্যাপী অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। ফ্রান্সের ধর্মবিরোধী এ অবমাননা বিশ্বমুসলিম নেতৃত্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ফ্রান্স সরকারকে অবিলম্বে এ ধৃষ্টতাপূর্ণ ব্যঙ্গচিত্র প্রচারনা বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সারাবিশ্বে প্রতিবাদের দাবানল ছড়িয়ে পরবে এবং নবীপ্রেমিকরা ফ্রান্সের সকল পণ্যবর্জন করতে বাধ্য হবে। তিনি বিশ্বশান্তির দূত হযরত মহানবী (সা.) এর অবমাননা বন্ধে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহবান।

তিনি বলেন, বাকস্বাধীনতার নামে ফ্রান্স ইসলাম বিরোধী চরম অসভ্য ও নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে। ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীও এর আগে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছে। এসব উগ্র কর্মকান্ড প্রমাণ করে ফ্রান্স সরকার ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ফ্রান্স সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া বিশ্বের মুসলমানদের নৈতিক ও ঈমানি দায়িত্ব।

এ সময় তিনি বলেন, মুসলমানরা অন্যকোন ধর্মের উপর কখনও আঘাত করার ইতিহাস নেই। বার বার অমুসলিমরাই ইসলাম ধর্মের উপর আঘাত করে আসছে এবং নবী সা.-এর ব্যঙ্গচিত্র করে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করছে। কাজেই বাকস্বাধীনতার নামে প্রাণপ্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কোন ধরণের ব্যঙ্গ-বিদ্রæপ বরদাশত করা হবে না বলেও হুশিয়ার উচ্চারণ করেন। অবিলম্বে সরকারিভাবে ফ্রান্সের এই ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কড়া প্রতিবাদ জানাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

দলটির প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ূম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

 
Electronic Paper