দ্বৈত ভোটারে কঠোর ইসি
অবশেষে মামলার সিদ্ধান্ত, সংশ্লিষ্ট শাখায় ইউও নোট
মো. হুমায়ূন কবীর
🕐 ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কেলেঙ্কারির কিছু ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য দ্বৈত ভোটার পেলেই সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে মামলা দেওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি ১০০ নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এরই মধ্যে কমিশনের এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য মাঠপর্যায়ে চিঠিও যাওয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া দ্বৈত ভোটার হওয়ায় কতজন নাগরিকের নামে এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের করা হয়েছে, সে তথ্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট শাখায় ইউও (আন অফিসিয়াল) নোট দিয়েছে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, প্রথম দ্বৈত ভোটার ধরা পড়লে আগের এনআইডি ঠিক রেখে পরেরটি বাদ দেওয়া হতো। অনেক ক্ষেত্রে দুটি এনআইডিই লক করে রাখত ইসি। পরে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে আগেরটি বহাল রেখে পরেরটি বাদ দেওয়া হতো। ঝামেলা এড়াতে মামলায় যেতে চায়নি ইসি। কিন্তু ঝামেলা যতই থাক, বর্তমানে সরাসরি মামলা দিয়ে দিচ্ছে ইসি।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের উপ-পরিচালক (তথ্য অনুসন্ধান) মো. রশিদ মিয়া স্বাক্ষরিত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচনী সহায়তা ও সরবরাহ শাখায় দেওয়া এক ইউও নোটে গতকাল ভোটার তালিকায় একাধিকবার অন্তর্ভুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, জেলা-উপজেলা-থানা নির্বাচন অফিসের নাম উল্লেখসহ মামলা করার জন্য কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত কর্মকর্তার নাম, পদবি, ঠিকানা; যাদের নামে মামলা হয়েছে তাদের দুটি এনআইডি নম্বর, নাম-ঠিকানা, মামলা থাকলে তার নম্বর, সর্বশেষ; মামলা না করা হয়ে থাকলে তার কারণ; নির্বাচন অফিসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর কোনো অনিয়ম রয়েছে কিনা; অনিয়ম থাকলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাদের নাম, পদবি, বিবরণ এবং অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তার কারণ জানিয়ে ছকে এসব তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার মনির হোসেন ও আবু সিদ্দিক, পাঁচলাইশের আবদুল মজিদ, মো. সাইদুল ইসলাম, মো. আবুল কালাম বাবু ও মোস্তাক আহমদ, পাহাড়তলীর মো. আবুল কালাম আজাদ, হাটহাজারীর আব্দুর রহমান, মো. সাইফুল্লাহ মনি ও মনোয়ারা বেগম, সন্দ্বীপের মো. শেখ ফরিদের নামে মামলা দেওয়ার নির্দেশনা ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন সময় উপজেলা-থানা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কাছে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন কার্যক্রমকালে কিছু ভোটার দ্বৈত ভোটার হিসেবে এএফআইসি ম্যাচিংয়ে মাধ্যমে চিহ্নিত হয়েছে। এসব চিহ্নিত ভোটার ভিন্ন ভিন্ন হাতের আঙ্গুলের ছাপ ও ভোটারের ব্যক্তিগত তথ্য আংশিক পরিবর্তন করে একই ব্যক্তিকে দুবার ভোটার হওয়ার বিষয়ে যিনি বা যারা সহযোগিতা করবেন, পরবর্তীতে তা তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে তাদের অধীন কর্মচারীদেরও এ বিষয়ে অবহিত করার জন্য বলা হয়। ইসির সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন জানান, দ্বৈত ভোটারদের নামে মামলা করা চলমান প্রক্রিয়া। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্বৈত ভোটারদের নামে মামলা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে দ্বৈত ভোটার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটি কোনো না কোনোভাবে ধরা পড়বেই।