ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ডিএনসিসির মহাখালীর মার্কেট হবে আরবান হাসপাতাল

তোফাজ্জল হোসেন
🕐 ৬:৪২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০৯, ২০২০

ঢাকা উত্তর সিটির মহাখালীস্থ মার্কেটকে ৫০০ শয্যার আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করার পরিকল্পনা হচ্ছে। ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম আজ রোববার মহাখালীতে ডিএনসিসি করোনা আইসোলেশন সেন্টার পরিদর্শনকালে এ কথা জানান। মেয়র আইসোলেশন সেন্টারটি ঘুরে দেখেন এবং কোভিড টেস্ট করাতে আসা মানুষের সাথে কথা বলেন।

পরিদর্শন শেষে মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন ডিএনসিসি মার্কেট মূলত পাইকারি কাঁচাবাজারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এটি বাজারে বাস্তবায়ন করা যায়নি। ৭০০ দোকান বিক্রয়ের পরিকল্পনা নিয়ে গত বছর সিটি কর্পোরেশনের বাজেট প্রণয়ন করেছিলাম। কিন্তু এর মাঝে কোভিড এলো।

কোভিড আমাদের অনেক বড় শিক্ষা দিয়ে গেছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব কোন হাসপাতাল নেই। কর্পোরেশন যখন দুই ভাগ হয় তিনটি হাসপাতালই দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে পড়েছে। মার্চের শুরুতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে আমরা বলেছিলাম প্রয়োজন হলে এই মার্কেটকে আইসোলেশন সেন্টারে রূপান্তর করা হবে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটি আর্মড ফোর্স ডিভিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর্মড ফোর্স ডিভিশন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে আমি একটি মিটিং করে কাজ শুরু করি। 

মেয়র বলেন, যারা বিদেশ যাচ্ছেন, তারা করোনা পরীক্ষা নিয়ে সমস্যার মধ্যে থাকেন। তাই এই মার্কেটটিকে পরবর্তীতে কোভিড টেস্টের জন্য রূপান্তর করা হয়। যারা বিদেশ যাবেন, তারা যাতে করোনা টেস্টের সনদ নিতে পারেন। এ ধরনের একটি প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। আমরা এখান থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড টেস্টের ফল দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি।

প্রথম দিন ২০ জুলাই এখানে ১২৩ জন পরীক্ষা করতে এসেছিল। আমাদের একটা পরিকল্পনা ছিল যারা বিদেশ যাবেন তারা যেন নির্বিঘ্নে, কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই করোনা টেস্ট করতে পারেন। বর্তমানে এখানে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার করোনা টেস্ট করা যায়। এই ক্যাপাসিটি আমরা অর্জণ করেছি। এখানে সমগ্র দেশ থেকেই মানুষ আসে করোনা পরীক্ষা করার জন্য। মানুষ যতই অনলাইনে ফরম ফিলাপ করে অনলাইনে টাকা জমা দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করার জন্য আমি নির্দেশ দিয়েছি। আমরা চাই নগরবাসীকে যথাসম্ভব কষ্ট কম দিতে।

আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, ৭.১৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই মার্কেটটির আয়তন ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট। যেহেতু ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কোন ধরনের আরবান হাসপাতাল নেই,এটিকে কিভাবে আরবান হাসপাতাল এ রুপান্তর যায়, আমরা তার পরিকল্পনা করছি। এই ভবনকে আমরা যদি আরবান হাসপাতাল এ রূপান্তর করতে পারি, তাহলে নগরবাসীর জন্য অনেক সুবিধা হবে।

তিনি আরো বলেন, মিরপুরে আরেকটি মার্কেট আছে, প্যারিস মার্কেট। সেটাকেও কিভাবে হাসপাতালে রূপান্তর করা যায় তা চিন্তাভাবনা করছি। এই দুটি ভবনকে হাসপাতালের রূপান্তর করার জন্য খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি প্রস্তাবনা আমরা জমা দেব।

এখানে বেড থেকে শুরু করে সকল ধরনের ইকুইপমেন্ট মোটামুটি আছে। ছয়তলায় ইংল্যান্ড থেকে আনা উন্নত মানের ২৫টি আইসিইউ আছে। আমরা এ টিকে অচিরেই ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নগরবাসীর জন্য একটি আধুনিক মাপের হাসপাতাল করার ইচ্ছা আমরা পোষণ করছি। আমাদের কাউন্সিলরগণও এতে মত দিয়েছেন। আমাদের সবই আছে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে ডাক্তার, নার্স পেয়েছি, সিএমএইচ থেকে ১৯ জন অফিসার পেয়েছি। আমরা সবাই মিলে চাই নগরবাসীকে একটি সুন্দর হাসপাতাল উপহার দিতে। আমি মনে করি এখানে হাসপাতাল হলে নগরবাসী উপকৃত হবে।

পরিদর্শনকালে আইসোলেশন সেন্টারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ জুবায়েদুর রহমান, আর্মড ফোর্স ডিভিশনের মহাপরিচালক (অপারেশন ও প্ল্যানিং) এ এন এম মঞ্জুরুল হক মজুমদার, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, আঞ্চলিক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল বাকী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

 
Electronic Paper