ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে বাংলাদেশের মুক্তি নেই: জাফরুল্লাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৩:০৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ০৯, ২০২০
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ভারত প্রতিদিন সীমান্তে বাংলাদেশিদের মারলেও আমাদের কোনো আওয়াজ নেই। অথচ নেপাল এ বিষয়ে সংসদে আইন করে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাই ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে বাংলাদেশের মুক্তি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার (৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত ‘খরাকালে পোড়াও, বর্ষাকালে ভাসাও’ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারতের এই নীতি প্রয়োগের প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, বাসদ নেতা বজলুর রশিদ প্রমুখ।
এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিদিন ভারত সীমান্তে লোক মারছে, আমাদের কোনো আওয়াজ নেই। অথচ নেপাল এ বিষয়ে সংসদে আইন করে ভারতে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের কোনো কোনো মন্ত্রী বলছেন ভারতে সাথে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। কিন্তু এ রক্ততো দূষিত রক্ত। দূষিত রক্ত দিয়ে কি হবে? পরিচ্ছন্ন রক্ত দরকার।’
ভারতের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে বাংলাদেশের মুক্তি নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘দূষিত রক্ত থেকে আমাদের মুক্তি দরকার।’
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এটা কী ওসি প্রদীপের ঘটনা, নাকি এর সাথে...যুক্ত আছে। এটাকে পরিষ্কারভাবে পরীক্ষা করা দরকার। এ জন্য পুলিশি তদন্ত দিয়ে হবে না। একটা স্বাধীন কমিশন গঠন করতে হবে। ১০ শতাংশ পুলিশ আছে যারা প্রদীপের মতো, বাকিরা সজ্জন। এ ঘটনায় যদি কমিশন গঠন না হয় সেটা হবে দুর্ভাগ্যজনক।’
তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখে আছি। সম্প্রতি ঈদ গেল। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে ২৫ কোটি মানুষ তাদের নিজের ধর্ম পালন করতে পারেনি। তারা গরুর মাংস খেতে পারলো না। অথচ হিন্দুরা চিরকাল, নরেন্দ্র মোদির পূর্বপুরুষরা গরুর মাংস খেতো। চোখ অন্ধ ভারত ২৫ কোটি মুসলমানকে ধর্ম পালন করতে দিচ্ছে না।’
‘একটা কাল্পনিক কাহিনিকে ভিত্তি করে তারা রামমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছে। মহাভারত, রামায়ণ দুটোর মধ্যেই প্ররোচনা ও মিথ্যাচারের গল্প-কাহিনি রয়েছে। তাদের গল্প-কাহিনির উপর ভিত্তি করেই ৫০০ বছরের পুরনো বাবরি মসজিদ ভেঙে দিয়ে সেখানে আজগুবি রামমন্দির নির্মাণ করছে ভারত। এটা জাতির একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা বাংলাদেশ এটার বিরুদ্ধে একটা কথাও বলিনি।’
তিনি বলেন, ‘হাউকোর্টের রায় ছিল মন্দির যেমন হবে তার চেয়েও বড় করে অযোদ্ধা মসজিদ করতে হবে। মন্দির তৈরি হলেও মসজিদ তৈরির কোনো কিছুই নেই, এটাই হচ্ছে ভারত।’
প্রবীণ এ চিকিৎসক বলেন, ‘১৯৭১ সালে রমনার কালি মন্দির পাকিস্তানিরা ভেঙে দিয়েছিল। শেখ সাহেব (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) এটাকে ঢাকার বাইরে নিয়ে বড় আকারে মন্দির তৈরি করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সংখ্যালঘুদের আপত্তিতে তা সরানো হয়নি। এটা ঢাকার নওয়াবদের দান করা জায়গা।’
তিনি বলেন, ‘মুসলমানদের এ সহনশীলতা থেকে ভারতের কিছুটা হলেও শেখা উচিত। কিন্তু তারা শিখবে না, তাদের শেখাতে হবে। শেখাতে হলে আজকে আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য আজকে আমাদের সব রাজনৈতিক দল শুধু সমবেত হওয়ার কথা বলে কিন্তু প্রতিবাদ…।আমাদের উচিত ছিল যেদিন রামমন্দির প্রতিষ্ঠা হলো সেদিন ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও করা। ফেলানি রাস্তা করার কথা ছিল, সেটাও আমরা করিনি। এইসব হচ্ছে আমাদের ব্যর্থতা।’