ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আলোচনায় নেই মেজর সিনহার সঙ্গী দুই শিক্ষার্থী

জামিন শুনানি হতে পারে আজ

মো. নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজার
🕐 ৯:২৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ০৯, ২০২০

গত ৩১ জুলাই রাতে মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশের হাতে নিহত হন সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়া মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনকে ছেড়ে দিলেও দুজন জেল হাজতে রয়েছে। মেজর সিনহা একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করতে এই তিনজনসহ গত ৩ জুলাই কক্সবাজার এসেছিলেন। এই তিন সদস্য হলেন- ঢাকার স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সাহেদুল ইসলাম সিফাত, একই বর্ষের ছাত্রী শিপ্রা রানী দেবনাথ ও একই বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র তাহসিন রিফাত নুর।

মেজর (অব.) সিনহা ডকুমেন্টারির প্রযোজক ছিলেন। ইউটিউবে দেওয়ার জন্য ‘জাস্ট গো’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় ডকুমেন্টারিটি তৈরির কাজ চলছিল।

মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় সংবাদ মাধ্যম এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের প্লাটফর্মে যত আলোচনা হচ্ছে তাতে প্রায় চাপাই পড়ে থাকছে সিনহা রাশেদের সঙ্গী দুই শিক্ষার্থীর কথা। তিনজনের মধ্যে তাহসিন রিফাত নূরকে অভিভাবকের কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি দুজন- শিপ্রা দেবনাথ এবং সাহেদুল ইসলাম সিফাত এখন কক্সবাজার কারাগারে রয়েছেন বলে জানান জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন। অবশ্য এই দুজনের মুক্তির দাবিতে ইতিমধ্যেই সহপাঠীরা ও সচেতন নাগরিকরা নানা কর্মসূচি পালন করছেন।

এই শিক্ষার্থীদের কী অবস্থা জানতে গিয়ে প্রতিবেদক জানতে পারেন, মেজর (অব.) সিনহার নিহত হওয়া নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তার মধ্যে, সিনহার সঙ্গে প্রাইভেট কারে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে আসামি করে টেকনাফ থানায় ২টি মামলা দায়ের করা হয়। সিফাতের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করার জন্য তাক করার কথা মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরেকটি মামলা মাদকদ্রব্য আইনে। সে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবৈধ মাদক জাতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট এবং গাঁজা যানবাহনে নিজ হেফাজতে রাখা। ঘটনার পর থেকে সাহেদুল ইসলাম সিফাত কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন। ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হিসাবে সাহেদুল ইসলাম সিফাতের বেশ সুনাম রয়েছে বলে জানা যায় তার সহপাঠীদের কাছ থেকে।

পুলিশের ভাষ্য মতে, মেজর রাশেদ খানকে গুলি করার পর পুলিশ জানতে পারে তাদের অস্ত্রের লাইসেন্স হিমছড়ি নীলিমা রিসোর্টে রয়েছে। এরপর সেটি খুঁজতে পুলিশ রিসোর্টে যায়। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সে রিসোর্টে গিয়ে একটি কক্ষে শিপ্রা দেবনাথ এবং আরেকটি কক্ষে তাহসিন রিফাত নূরকে পাওয়া যায়। এজাহারে পুলিশ উল্লেখ করেছে, শিপ্রা দেবনাথের কক্ষ তল্লাশি করে সেখানে বিদেশি মদ, দেশি চোলাই মদ এবং গাঁজা পাওয়া যায়। সাধারণ মানুষের কাছে এখন প্রশ্ন উঠেছে যদি হত্যা মামলা সাজানো হয় তবে কেন এই ছাত্ররা জেল হাজতে থাকবে?

কক্সবাজার জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন জানিয়েছেন, তারা কক্সবাজার জেল হেফাজতে আছে, তাদের সঙ্গে কেউ দেখা করতে আসেনি। তবে টেলিফোনে তাদের নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে কথা হয়েছে।

শিপ্রা দেবনাথ এবং সাহেদুল ইসলাম সিফাত উভয়ের জন্য একজন আইনজীবী ঠিক করা হয়েছে কক্সবাজারে। আইনজীবী আবুল কালাম আজাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উভয়ের জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আজ জামিনের শুনানি হতে পারে।

 
Electronic Paper