সরকারি প্রতিষ্ঠানে থাকবেন চিকিৎসক-নার্সরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ০৬, ২০২০
করোনা মহামারি রোধে বর্তমান সময়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে সবার প্রথমে যাদের নাম আসে তারা হলেন চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিতরা। করোনা চিকিৎসায় সম্পৃক্ত সরকারি চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় খাবারসহ পৃথক আবাসন সুবিধা প্রদানের নিমিত্তে হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। পরবর্তীতে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আবাসিক হোটেলের পরিবর্তে সরকারি ছয়টি প্রতিষ্ঠানে আবাসনের ব্যবস্থা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন একাডেমি), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ মানেজমেন্ট (বিআইএএম), জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি (এনএপিডি), ন্যাশনাল অ্যাক্যাডেমি অফ অ্যাডুকেশনাল ম্যানেজমেন্ট (এনএইএম), টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি) এবং জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট (এন আই এল জি)। এসব প্রতিষ্ঠান একজন করে ফোকাল পয়েন্ট নিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ৩ আগস্ট স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার উপসচিব ডক্টর বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, এসব স্থানে করোনা চিকিৎসায় সম্পৃক্ত সরকারি চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় খাবারসহ পৃথক আবাসন সুবিধা প্রদানের নিমিত্তে ফোকাল পয়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে সুবিধা নিশ্চিত করবেন।
উল্লেখ্য, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসিক হোটেলের বিল পরিশোধ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি হয়।
পরিপত্র অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকার মধ্যে দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসকরা দৈনিক দুই হাজার টাকা এবং ঢাকার বাইরে এক ১৮০০ টাকা ভাতা পাবেন। একইভাবে নার্সরা ঢাকার মধ্যে এক হাজার ২০০ ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার টাকা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা ঢাকার মধ্যে ৮০০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৬৫০ টাকা ভাতা পাবেন।
পরিপত্র জারির পর চিকিৎসকরা একাধারে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা আরাম আয়েশের জন্য হোটেলে অবস্থান করেননি। জীবন বাজি রেখে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সাতদিন চিকিৎসাসেবা প্রদানের পর পরবর্তী দুই সপ্তাহ হোটেলে কোয়ারান্টিনে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আবাসিক হোটেলে না থেকেও অনেকে হোটেলের বিল তুলে নিয়েছেন বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। ওইসব নানা অনিয়ম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারের খরচ কমাতে পরিপত্র অনুযায়ী নির্ধারিত ভাতা প্রদান করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আবাসন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিকিৎসক-নার্স স্বাস্থ্যকর্মীদের সরকারি প্রতিষ্ঠানে রাখার ব্যবস্থা নেয়।