ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আনন্দবাজারের সংবাদের প্রতিবাদ বিজিবির

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২০

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় ৭ জুলাই ‘অরক্ষিত জমিতে পা পড়ছে বাংলাদেশির’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সংবাদটিকে ‘ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও উল্লেখ করেছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। গতকাল শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘সীমান্তে রানীনগর ১ এবং ২ ব্লক ও জলঙ্গিজুড়ে প্রায় ২২ হাজার একর অরক্ষিত জমি এখন বাংলাদেশিদের বলে দাবি করছেন সেদেশের সীমান্ত ছোঁয়া গ্রামবাসী।’

এ বিষয়টির জবাব দিয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘পত্রিকায় ঘটনাস্থল রানীনগর সীমান্তের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেখানে কোনো ঘটনা ঘটেনি। উল্লেখিত এলাকাটি রাজশাহী বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ এলাকা চারঘাট বিওপি হতে শুরু করে তালাইমারি বিওপি পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এখানে পদ্মা নদী বরাবর শূন্য লাইন অতিক্রম করেছে। এর উভয়পার্শ্ব বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল।’

‘সংবাদে বলা হয়, সীমান্তের রানীনগর ১ ও ২ ব্লক এবং জলঙ্গি জুড়ে প্রায় ২২ হাজার একর অরক্ষিত জমিতে বাংলাদেশিরা অবাধে চাষাবাদ করছে। বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভারতের অভ্যন্তরে গিয়ে চাষাবাদ করা তো দূরের কথা, বর্তমানে আন্তর্জাতিক সীমারেখা বরাবর চাষাবাদ করাই অসম্ভব একটি ব্যাপার। সেখানে প্রতিনিয়ত শূন্য লাইন বরাবর বিজিবি সদস্যরা রাত দিন টহল দিয়ে সীমান্ত রক্ষা করছেন।’

‘প্রকাশিত সংবাদে আরও বলা হয় যে, দিন কয়েক আগে দুজন বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় এলাকায় চলে আসলে বিএসএফ তাদের আটক করে এবং ফলশ্রুতিতে তার মুক্তিপণ স্বরূপ রানীনগর সীমান্তের গ্রাম থেকে দুইজন গ্রামবাসীকে তুলে নিয়েছে বাংলাদেশি দুষ্কৃতিকারীরা। কিন্তু বাস্তবে আসল ঘটনা সম্পূর্ণ উল্টো এবং প্রকাশিত সংবাদটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে বিজিবি জানায়, ‘মূলত গত ২ জুলাই জলঙ্গি সীমান্তে দুটি ঘটনা ঘটে যা পত্রিকার মূল বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। গত ২ জুলাই সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে নয়ন শেখ এবং শহিদুল শেখ নামক দুইজন জলঙ্গি নিবাসী ভারতীয় চোরাকারবারি অবৈধভাবে জলঙ্গি সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমারেখা অতিক্রম করে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইউসুফপুর গ্রামে মাদক ব্যবসা এবং অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনের ওপর চড়াও হয়। স্থানীয়রা ব্যাপারটিকে সহজভাবে না নিয়ে তাদের ঘেরাও করে ফেলে। পরে ইউসুফপুর বিজিবি ক্যাম্প খবর প্রাপ্তি সাপেক্ষে ভারতীয় দুজনের নিরাপত্তার কথা ভেবে নিজেদের হেফাজতে তাদের নিয়ে নেয়।

অপরপক্ষে একই দিন ১২টায় বিএসএফ টহল দল অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমারেখা অতিক্রম করে ৩০০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে (পিলার ৭২/৪-এস বরাবর) প্রবেশ করে ইউসুফপুর এলাকা থেকে তিনজন নিরীহ ও নিরপরাধ কৃষককে ধরে নিয়ে যায়, যারা চর এলাকায় শুধুমাত্র চাষাবাদ করে বাড়ি ফিরছিল।’

‘উভয় ঘটনার রেশ ধরে একই দিনে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে ৩ জুলাই ২০২০ তারিখে শান্তিপূর্ণভাবে উভয় দেশের নাগরিক হস্তান্তর-গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাপারটি সুষ্ঠুভাবে মীমাংসা হয়েছে।’

বিজিবি আরও জানায়, ‘মূলত স্থানীয় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বিএসএফের সঙ্গে জনগণের বৈরী সম্পর্ক, স্থানীয় গরু চোরাকারবারি কর্তৃক এই মৌসুমে কোনো কাজ করতে না পারা, মাছ ধরার সময় বিএসএফ কর্তৃক স্থানীয় জেলেদের থেকে চাঁদা আদায় এবং সর্বোপরি স্থানীয় বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্য ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি স্থানীয় ভারতীয় জনগণ অথবা স্বার্থান্বেষীমহল কর্তৃক প্রদান করা হতে পারে বলে অনুমেয়।’

 
Electronic Paper