ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুর্যোগ মোকাবিলার দীর্ঘ অভিজ্ঞতাই কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে

জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
🕐 ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৯, ২০২০

জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলার দীর্ঘ অভিজ্ঞতাই কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে। জাতিসংঘে চলমান উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম (এইচএলপিএফ)-এর এক ভার্চুয়াল সাইড ইভেন্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা একথা বলেন।

তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও অবিরত প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হওয়ার ফলে দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণ, এতে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্তকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বছরের পর বছর ধরে যে সক্ষমতা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে তা আজ কোভিড-১৯ এর মতো মহামারি মোকাবিলায় কাজে লাগছে।”

ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কোভিড পরবর্তী বিশ্বে অভিযোজন ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানো : নবতর, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থানীয় জনগণ সম্পৃক্ত জলবায়ু নীতি ও কর্ম-পরিকল্পনা”শীর্ষক এই ভার্চুয়াল সাইড ইভেন্টটির সহ-আয়োজক ছিল বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস্, আয়ারল্যান্ড, কেনিয়া, ভূটান এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস এন্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিজ্ (আইএফআরসি)।
নেদারল্যান্ডস-এর ভাইস মিনিস্টার রোয়াল্ড ল্যাপ্পিরি, আইএফআরসি’র জাতিসংঘে স্থায়ী পর্যবেক্ষক ও প্রতিনিধিদলের প্রধান রিচার্ড ব্লিউইট; ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ডেভেলাপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) এর পরিচালক এবং ক্লাইমেট ভারনারেবল ফোরামের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. সালিমুল হকসহ বিভিন্ন স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘ সংস্থা ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিগণ ইভেন্টটিতে অংশ নেন।

কোভিড-১৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন উভয়কেই জীবন, জীবিকা ও উন্নয়নের জন্য বিশেষ করে যে সকল দেশে আগে থেকেই নাজুক পরিস্থিতি বিদ্যমান সে সকল দেশের জন্য ভয়াবহ হুমকি হিসাবে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এছাড়াও স্বাস্থ্য ও জলবায়ুর জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় গৃহীত বৈশ্বিক প্রস্তুতি ও পদক্ষেপসমূহ মারাত্মকভাবে অপ্রতুল মর্মে উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, সম্প্রতি কীভাবে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশ একই সাথে কোভিড-১৯ ও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের দ্বৈত ঝুঁকি মোকাবিলা করেছে।

বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়ন, শক্তিশালী আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, ত্রুটিহীন দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতির অনুশীলন, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের লক্ষে খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল শস্যের জাত উদ্ভাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন ও ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনের প্রচেষ্টাসমূহকে শক্তিশালী করতে বাংলাদেশ যে সকল কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতেমা।

তিনি অভিযোজন ও ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা সুদৃঢ় করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার –“সমগ্র সমাজ দৃষ্টিভঙ্গি”এর কথা উল্লেখ করেন যেখানে জলবায়ু, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় গৃহীত সরকারি প্রচেষ্টাসমূহের কেন্দ্রবিন্দুতে নারী, যুবসমাজ ও স্থানীয় জনগণকে রাখা হয়েছে।

কোভিড পরবর্তী পুনরুদ্ধার এবং জলবায়ু কর্ম-পরিকল্পনায় গৃহীত জাতীয় প্রচেষ্টাসমূহকে বিশেষ করে সবচেয়ে নাজুক দেশগুলোতে বাড়তি আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর সমর্থন জোগাতে সকল উন্নয়ন অংশীদার, বহুপাক্ষিক দাতাসংস্থা ও বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

নেদারল্যান্ডসের ভাইস মিনিস্টার বলেন, কোভিড পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা অবশ্যই ব্যাপকভিত্তিক হতে হবে এবং যে কোনো ভবিষ্যৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধকল মোকাবিলায় শক্তিশালী সামর্থ্য বিনির্মাণে এই পরিকল্পনা হতে হবে জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপসমূহের পরিপূরক।

অভিযোজন ও ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনে গৃহীত বৈশ্বিক প্রয়াসের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ঘাটতিসমূহ দূর করতে আরও জোরালো প্রচেষ্টা গ্রহণের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন আইসিসিসিএডি এর পরিচালক ড. সালিমুল হক।

 
Electronic Paper