ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভয়াবহ পানি সংকটের দিকে রাজধানী!

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৫, ২০২০

একটা সময় বলা হত পানির অপর নাম জীবন। পরবর্তীতে তা বদলে বলা হল বিশুদ্ধ পানির নাম জীবন। বলা হয়ে থাকে জনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকায় গ্যাস-বিদ্যুৎসহ জীবন ধারণের অন্য সব উপকরণ ছাড়া চলতে পারলেও পানি ছাড়া এক মুহূর্তও কল্পনা করা যায় না। ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে ঘুমে যাওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক নগরবাসী বিভিন্ন কাজে পানির ওপর নির্ভরশীল।

এদিকে রাজধানী ঢাকায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ওয়াসার পরিত্যক্ত কূপের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিবছরই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানির যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে রাজধানীতে। বিপরীতে তুলে ফেলা পানির ঘাটতি পূরণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। তাই মাঝেমধ্যে হওয়া পানি সংকটের হাত ধরে যেন ধেয়ে আসছে ভয়াবহ পরিণতি। একসময় পরিত্যক্ত নগরীতে পরিণত হওয়ারও আশঙ্কা করছেন তারা। ওয়াসা বলছে, বৃষ্টির পানি মাটির নিচে দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। শতভাগ পানিই আনা হবে শহরের বাইরে থেকে।

প্রতিদিন ঢাকা ওয়াসা ৮৮৭ টি পাম্পের মাধ্যমে ২৫৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে। এর শতকরা ৬৮ ভাগ মাটির নিচের উৎস থেকে আসে। এছাড়াও শিল্প কারখানা ও বহুতল ভবনে গভীর নলকূপ দিয়ে বিপুল পরিমাণ পানি তোলা হয়। অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে ও স্তর নিচে নেমে গিয়ে কূপ পরিত্যক্ত হয়ে প্রায়ই পানি শূন্য থাকে বিভিন্ন এলাকা।

আশপাশের গ্রামগুলোতে আগে ৮ থেকে দশ ফুট খুঁড়লেই পানি পাওয়া যেত। এখন বেশি খনন করেও বছরজুড়ে ব্যবহার উপযোগী পানিও পাওয়া যায় না কয়েক বছর ধরে। অর্থাৎ পানির স্তর নিচে নামার প্রভাব শহরতলীতেও পড়তে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরের মধ্যে ২০০০ পুকুর থাকলেও তিন দশকে টিকে আছে মাত্র শ’ খানেক। খাল ও নদ-নদীগুলো ময়লা-আবর্জনা-বর্জ্যে দূষিত থাকে প্রায় সারা বছর। এ পানি ভূ-গর্ভে গেলে উপকারের বদলে ক্ষতিই বেশি হবে ব্যবহারকারীদের।

ঢাবি ভূগোল পরিবেশ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম নাজেম বলেন, আমাদের বিল্ডিং কন্সট্রাকশন এবং শহর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে যে অনিয়ম চলছে তাতে করে ফাঁকা কিছু থাকছে না। পানি যে চুইয়ে নিচে যাবে সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এক দশক ধরে নানা পদক্ষেপের পর মাত্র ৩২ শতাংশ পানি বাইরে থেকে আনতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা ওয়াসা।

বিতরণ লাইন সম্পন্ন না হওয়ায় এখনও মাটির নিচ থেকেই পানি তোলা হয়। এ কারণে আরও সংকুচিত হচ্ছে হাজার বছর ধরে জমানো ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর। ওয়াসার ভাবনা এবার বৃষ্টির পানির বিকল্প ব্যবহার নিয়ে। ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, বেশ কিছু পরিত্যক্ত কূপের মাধ্যমে ঢাকার যে বৃষ্টির পানি তা ধরে নিচে দিতে চাই।

প্রতিবছর ঢাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। জলাধার তৈরি করে এ পানি ব্যবহার উপযোগী করলে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমানো এবং বহু দূর থেকে শোধন করে পানি আনার খরচও কমবে- এমন অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

 

 
Electronic Paper