সংকটে নীলক্ষেতের বই ব্যবসায়ীরা
শাকিল আহমেদ
🕐 ১০:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ০১, ২০২০
হাজারো বইয়ের সমাহার। রাজধানীর নীলক্ষেতে গেলেই চোখে পড়ে থরে থরে সাজানো বই। সারি সারি বইয়ের দোকানে ঢুকতে গেলেই দোকানিদের হাঁকডাক। কি বই লাগব মামা? যেন ক্রেতাদের দেখা পেলেই মুখরিত হয়ে ওঠেন তারা। আর কিছু বই বিক্রি করতে পারলেই যেন তৃপ্তির জোয়ার। বইপ্রেমীরাও সব ধরনের বই কিনতে এখানে আসেন। তবে করোনাভাইরাসের প্রকোপে পরিচিত এ চিত্র পাল্টে গেছে। নেই ক্রেতাদের সমাগম।
আর দোকানিরাও হতাশায় প্রতিটি দিন পার করছেন। মাস শেষ হলেই দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন ও নিজেদের সব খরচ নিয়ে বিপাকে তারা। জানা যায়, কিছুদিন আগে গোলাম মোস্তফা নামে একজন দোকানি বইয়ের ব্যবসাই ছেড়ে দেন। প্রায় দুই যুগেরও অধিক সময় করা এ ব্যবসা কেন ছেড়ে দেন জানতে চাইলে গোলাম মোস্তফা জানান, প্রায় ৩০ বছর ধরে আমি বইয়ের ব্যবসা করি। করোনার পর থেকে ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। প্রতিদিনই লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে। বই বিক্রি করে যা আয় হচ্ছে, তার থেকে বেশি লোকসান হচ্ছে।
ওই দোকানের বর্তমান মালিক রনি আহমেদ বলেন, মোস্তফা ভাই অনেক ক্রেতাদের কাছে ‘মোস্তফা মামা’ নামে পরিচিত। তিনি অনেক বছর ধরে এ ব্যবসা করে আসছিলেন। হয়তো ব্যবসা ভালো না থাকায় দোকান ছেড়েছেন। ক্রেতা ফেরদৌস নাওয়ার তাহসিন বলেন, আমি মোস্তফা মামার দোকান থেকে সাহিত্যের বই কিনি। দোকানে এসে শুনলাম তিনি দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। এটা সত্যি দুঃখজনক। তবে তার জন্য শুভকামনা। আরেকজন বই বিক্রেতা বলেন, করোনার পর থেকে কারোই ব্যবসা ভালো চলছে না। আগের মতো ক্রেতা নেই। দিন শেষে মাস পেরোলেই কাঁধে ভর করে নানা ভাড়া। ব্যবসা ভালো না থাকায় দোকান ভাড়া দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। এজন্য অনেকে বাড়িও চলে গেছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, ৪০০ ব্যবসায়ীর মধ্যে প্রায় দেড়শ ব্যবসায়ীর সংসার চলে প্রতিদিনের আয় দিয়ে। লভ্যাংশের কোনো অর্থই জমা থাকে না। বছরের প্রথম চার থেকে পাঁচ মাসের আয় দিয়েই চলতে হয় সারা বছর। করোনার এ পরিস্থিতিতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।