ইয়াবা পরিবার
ওষুধ ব্যবসার আড়ালে স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, জামাতাসহ স্বজনদের ইয়াবা ব্যবসায় নামিয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:২২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৬, ২০১৮
জহির আহম্মেদ ওরফে মৌলভি জহির। ঢাকা ও টেকনাফ দুই জায়গাতে যাওয়া-আসার মধ্যে থাকা ৬০ বছর বয়সী জহির পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী। কিন্তু ওষুধ ব্যবসার আড়ালে স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, জামাতাসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে গড়ে তুলেছেন ইয়াবা ব্যবসার সিন্ডিকেট। এমনটাই ভাষ্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব)।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জহিরের ইয়াবা ব্যবসার খবর পাওয়ার পর গত বুধবার রাতে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের দুটি বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। ওই অভিযানে বাসা দুটি থেকে ২ লাখ ৭ হাজার ১০০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ইয়াবা বিক্রির ১৬ লাখ ৪ হাজার টাকাও সেখানে পাওয়া যায়। গ্রেপ্তার করা হয় ছয় মাদক ব্যবসায়ীকে। র্যাব জানায়, উদ্ধার করা ইয়াবার মূল্য ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান। তিনি জানান, মৌলভি জহির ওষুধ ব্যবসার আড়ালে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টেকনাফ থেকে ঢাকায় ইয়াবা ব্যবসা বিস্তার করে। গত এপ্রিল মাসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ধানমন্ডি থেকে জহিরের ছেলে বাবু গ্রেপ্তার হয়েছিল। জহিরের সঙ্গে টেকনাফের বেশ কয়েকজন ছাড়াও ২৫-৩০ জন সিন্ডিকেট সদস্য রয়েছে। তিনি জানান, এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে বিভিন্ন পরিবহনে কর্মরত কয়েকজন চালক-সহকারী, দুটি কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মচারীসহ ঢাকার কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা রয়েছেন।
মুফতি মাহমুদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জহির সিন্ডিকেটের মিয়ানমারের প্রতিনিধি আলম ওরফে বর্মাইয়া আলমের নাম বলেছেন। বর্মাইয়া মিয়ানমারের মংডুতে স্থায়ীভাবে বাস করছে বলেও জানান তিনি। বর্মাইয়ার বাড়িতেই ইয়াবা মজুদ রেখে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে নৌপথে মংডু থেকে ইয়াবা পাচার করে টেকনাফের নাজিরপাড়া, জালিয়াপাড়ায় নিয়ে আসে। তারপর সেখান থেকে বিভিন্ন পরিবহন, কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় প্রবেশ করে ইয়াবা। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিকস সরঞ্জামাদির ভেতরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় এসব ইয়াবা পাঠানো হতো।
তিনি জানান, এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে উদ্ধার করা ইয়াবাগুলো এক সপ্তাহ আগে দুটি চালানে আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জহির স্বীকার করেন, কার্টনে এসি ও ফ্যানের ভেতরে সেগুলো বহন করা হয়।
মুফতি মাহমুদ জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জহির আহম্মেদ (৬০), মমিনুল আলম (৩০), ফয়সাল আহম্মেদ (৩১), মিরাজ উদ্দিন নিশান (২১), তৌফিকুল ইসলাম ওরফে সানি (২১) ও সঞ্জয় চন্দ্র হালদার (২০)। এদের মধ্যে একজন ব্যাংকার ও কয়েকজন ছাত্র রয়েছেন। তাদের কয়েকজন মাদক সেবন থেকে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হয়েছেন।