রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমআইএস শাখার পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সংক্ষেপে গত ২৪ ঘণ্টার চিত্র তুলে ধরার পর সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। 

ব্রিফিংয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ১৩ জন শনাক্ত হয়েছেন আইইডিসিআরে, বাকি পাঁচজন ঢাকার বাইরের ল্যাবে শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, পাঁচজন নারী। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজন মারা গেছেন, তার বয়স ৫৫ বছর। তিনি নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ১১১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং নয়জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে ১২ হাজার ৬৬৯ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে এবং তিনজনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে ৪০০ জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হলেও তাদের মধ্যে ৩৩৬ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

এসময় তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অতিমাত্রায় ছড়িয়ে পড়লে তা মোকাবেলা করা অসম্ভব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘চীনের উহানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে ওই সময়েই আমরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে তা আমরা আস্তে আস্তে জানতে পারছি। প্রতিদিন প্রতিসপ্তাহে আমাদের নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। আমরা আসলে জানি না এই পরিস্থিতি কবে নাগাদ শেষ হবে।’

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে বিশ্বের ২০৬টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ১২ লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৬৫ হাজার ৬৫৯ জন। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২ লাখ ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ।

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। সবশেষ হিসাবে করোনায় বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮ জন। মারা গেছেন নয়জন। এছাড়া সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৩৩ জন।

করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এই ছুটি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।