হজ নিয়ে অনিশ্চয়তা
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ৩:৪৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৩, ২০২০
করোনা ভাইরাসের প্রকোপে সারা বিশ্ব। এ অবস্থায় মুসলিমদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় জমায়েত পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে কি-না সেটা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। করোনা ভাইরাসের বর্তমান ভয়াবহতা অব্যাহত থাকলে ২২২ বছর পর এবার প্রথম বাতিল হতে পারে হজ। সর্বশেষ ১৭৯৮ সালে বাতিল হয়েছিল হজের আনুষ্ঠানিকতা। এ ছাড়া মহামারি ও যুদ্ধের কারণে আরও প্রায় ৪০ বার এ বার্ষিক জমায়েত বাতিল হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সৌদি আরবের পক্ষ থেকে হজ নিয়ে এখনই কাউকে চুক্তি না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সৌদি আরবের কর্মকর্তাদের দেওয়া ইঙ্গিত পর্যালোচনা করে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাতিল হতে পারে এ বছরের হজ। জুলাই মাসের শেষের দিকে শুরু হওয়ার কথা এ বছরের হজের আনুষ্ঠানিকতা।
তবে হজের নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম এখনো বন্ধ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসলিমদের হজে অংশগ্রহণের বিষয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের পুরো দেশে ঘোষণা করা হয়েছে লকডাউন। দেশটির পবিত্র দুই নগরী মক্কা ও মদিনাতে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কারফিউ জারি করা হয়েছে, যা হজযাত্রার কেন্দ্রবিন্দু।
লন্ডনের কিংস কলেজের ওয়ার স্টাডিজের লেকচারার সিরাজ মাহের বলেন, সৌদি কর্তৃপক্ষ মানুষকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করছে যে, এবারের হজ বাতিল হতে পারে। অতীতের ঐতিহাসিক উদাহরণ উল্লেখ করে সিরাজ মাহের বলেন, বিপর্যয় বা সংঘাতসহ বিভিন্ন কারণে হজ বাতিল করা হয়েছিল। আমার মনে হয়, এটি সেই বৃহত্তর প্রচেষ্টা যাতে মানুষকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে, হজ যদি বাতিল করা হয়েই থাকে তাহলে তা একেবারেই কোনো অভূতপূর্ব ঘটনা নয়।
সিরাজ মাহের জানান, ইসলামে কেয়ামতের ইঙ্গিতের যে ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, হজ বাতিল হয়ে যাবে। কেউ কেউ বলছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে হজ বাতিল হলে তা কেয়ামত নিকটে আসার ইঙ্গিত বহন করবে।
আবার কেউ কেউ বলছেন, তা যথাযথ নয়। কারণ কেয়ামতের ইঙ্গিত দিতে গিয়ে হজের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছে, মহামারির কারণে হজ বাতিল তো আলাদা ব্যাপার। সিরাজ মাহেরের দাবি, ভবিষ্যদ্বাণী কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন তার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করবে।
এদিকে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বান্তেন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, সৌদি আরব সমস্ত মুসলিম ও নাগরিকের সুরক্ষার জন্য প্রস্তুত। এ কারণেই আমরা পরিষ্কার ধারণা না পাওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে হজের বিষয়ে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশ্বের সমস্ত মুসলিমদের কাছে এ মুহূর্তে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না করার জন্য অনুরোধ করেছি।