ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

করোনা ভাইরাসের প্রভাব

স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে দুর্বল বছর হতে যাচ্ছে ২০২০

সিনজাত রহমান সানি
🕐 ১০:১৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০

খুব দ্রুতই বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস, যার প্রভাব ইতিমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়তে শুরু করেছে। অর্থনীতিতে এ ভাইরাসের প্রভাব পরিমাপ করা এই মুহূর্তে কঠিন। পৃথিবীতে কতটা সংক্রমণ ঘটে এবং তা কতটা দীর্ঘ হয় তার ওপর নির্ভর করছে ক্ষতির পুরো চিত্র।

অর্থনীতিবিদরা পূর্বাভাসে বলছেন, চলতি ২০২০ সাল অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল বছর হতে চলেছে।

করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের বড় মেগা প্রকল্প গুলো পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র্র্র, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল সংযোগ, কর্ণফুলী টানেল- এছাড়াও প্লাস্টিক খাত, ঔষধ শিল্প, খুচরা যন্ত্রপাতির বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃহৎ আকারের। শুধু চীন থেকেই বছরে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ, যা এই সময়ে খুবই নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও অধ্যাপক ড. আব্দুল হামিদ বলেন, চীনাদের কারিগরি সহযোগিতায় আমাদের বড় প্রকল্পগুলো হচ্ছে। তারা অবাধে চলাফেরা করতে না পারায় ও ছুটিতে থাকার কারণে প্রকল্পের কাজ বাধাগ্রস্ত হবে- এটাই স্বাভাবিক।

পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের কোনো সম্ভাবনা আছে কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কোনো দেশের রপ্তানি সাময়িক বা দুই-তিন মাসের ওপর নির্ভর করে হয় না। সাময়িক সময়ের জন্য কাজ পেলেও দীর্ঘ সময়ে কাজ পাওয়া যাবে বিষয়টা অবান্তর।

একটা দেশের শিল্প কারখানা যখন অন্য দেশের কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে, তখন সংকটকালে নতুন করে বাজার খুঁজতে হবে। যদি এটা (করোনা ভাইরাস) দীর্ঘমেয়াদি হয়, তাহলে? এই সময়ের মধ্যে অনেক দেশের শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, যার ফলে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এয়ারলাইন্সের ব্যবসাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

অধ্যাপক হামিদ বলেন, করোনা ভাইরাসে প্লাস্টিক খাত, ঔষধ শিল্পে প্রভাব পড়েছে। শিল্প কারখানাগুলোর যদি পর্যাপ্ত মজুদ না থাকে তাহলে পণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে। কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, নতুন করে বাজার খোঁজা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, এতে কাঁচামাল ক্রয় ও পরিবহন খরচ বাবদ বেশি অর্থ লাগবে। এ ছাড়াও বাজারে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট ঘটাতে পারে, সরকারকে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

করোনা ভাইরাসের সতর্কতামূলক অর্থনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে তিনি বলছেন, যেহেতু বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ, তাই এটা একবার প্রবেশ করলে আটকানো কঠিন হয়ে যাবে। এটা খুব সহজেই ছড়াচ্ছে, আমাদের সচেতনতাও কম। তাই মানুষের আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পোর্ট ও বিমানবন্দরে আরও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।

এ ছাড়াও জনগণকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। পারিবারিকভাবে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বিষয়ে জানাতে হবে। মাস্ক ব্যবহার, ঘন ঘন পানি পান করতে হবে ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এমনিতেই আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতার সংকট। তার ওপর চীনা সহায়তার বড় প্রকল্পে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা আটকে পড়লে সেটা দুশ্চিন্তারই কারণ। আর সময়মতো কাজ না এগোলে প্রকল্প ব্যয় বাড়বে বা বাড়ানোর অজুহাত তোলা হতে পারে।

 

 

 
Electronic Paper