ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বইপ্রেমী পাঠকদের ভিড় বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:২১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০

ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় দিনে পর্দা উঠেছে অমর একুশে বইমেলার। প্রতিটি দিন গড়াচ্ছে আর মেলায় ভিড় বাড়ছে বইপ্রেমী পাঠক, লেখক, দর্শনার্থীর। তবে ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে মেলায় মানুষের সর্বোচ্চ উপস্থিতি থাকবে বলে আশা করছেন বইমেলা সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার অনেকেই দল বেঁধে বইমেলায় এসেছেন। কেউ কেউ বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে, কেউবা পরিবার পরিজন, প্রিয় মানুষকে নিয়ে। শিশু, কিশোর-কিশোরীরাও এসেছে। মেলায় আগতরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন নিজের প্রিয় লেখকদেরসহ মেলায় আসা নতুন বইগুলো। এ স্টল থেকে ওই স্টলে ঘোরাঘুরিতে কাটিয়ে দিচ্ছে সময়। পছন্দমত বইও কিনছে। অনেকে আবার দল বেঁধে এসে বিভিন্ন স্টল ঘুরে চলে যাচ্ছেন।

বইমেলায় আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সানজিদা হক বলেন, সুযোগ পেলেই প্রায় দিনই বইমেলায় চলে আসি। স্টলে স্টলে ঘুরি আর বই কিনি। প্রথম দিকে বইমেলা তেমন একটা না জমলেও, দিন যত যাচ্ছে মেলায় মানুষ বাড়ছে। এখন প্রতিদিনই ব্যাপক উপস্থিতি থাকছে। বাকি দিনগুলোতে বইপ্রেমী পাঠক, দর্শনার্থীদের ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।

কথা প্রকাশ স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধি মারুফ আহমেদ বলেন, মেলা শুরু হওয়ার পর প্রথম দিকে তেমন একটা না জমলেও, দিন যত যাচ্ছে বইপ্রেমী ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় তত বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে বেচাবিক্রিও। আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বইমেলায় সর্বোচ্চ উপস্থিতি হবে বলে আশা করছি।

চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনীর প্রকাশক চৌধুরী ফাহাদ বলেন, চমৎকার আয়োজনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে এবারের বইমেলা। তবে মেলায় মানুষ আসার জন্য একটা ইজি কমিউনেকশন দরকার। অফিস বা বাসা থেকে বের হয়ে মানুষ বইমেলায় আসতে যে জ্যামের কথা চিন্তা করছে, সেই জিনিসটা যদি কোনোভাবে কমিয়ে আনা যায়, তাহলে নিশ্চয় মেলায় আরও মানুষের সংখ্যা বাড়বে।

বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ৮ লাখ বর্গফুট জায়গায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের বইমেলা। বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করা এবারের মেলা প্রাঙ্গণে মুজিববর্ষ উদযাপনের ছোঁয়া লেগেছে। নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণ। প্রিয় লেখকসহ মেলায় আসা নতুন বইগুলো দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন। অনেকে পছন্দের বই কিনছেন। আবার অনেকে বন্ধুদের নিয়ে দল বেঁধে মেলায় এসেছেন। ঘুরে দেখছেন বিভিন্ন স্টল। অনেকে আবার বই কিনে লেখকের অটোগ্রাফ নিয়ে তার সঙ্গে ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। সবকিছু মিলিয়ে জমে উঠেছে এবারের বইমেলা।

এদিকে অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু কর্নারে শিশুদের জন্য রয়েছে নানা স্টল। সেগুলোতে বই সাজানোর পাশাপাশি শিশুদের বিনোদনের জন্য একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চের পাশে লেখা রয়েছে- ‘পৃথিবীটা দেখছি প্রতিদিন শিখছি প্রতিদিন’, ‘পড়ালেখার নতুন সুর চলো যাই সিসিমপুর’, ‘পড়ি বই, জানতে জানতে বড় হই’।

বইমেলার প্রথম ১৯ দিনে নতুন বই এসেছে মোট ২ হাজার ৮৮১টি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মেলায় এসেছে মোট ১৪৩টি নতুন বই। লেখক, দর্শনার্থী ও বইপ্রেমীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে উঠেছে বইমেলা প্রাঙ্গণ।

এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৯টি স্টল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৯৪টি স্টলসহ মোট ৫৬০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৭৩টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলা একাডেমিসহ ৩৩টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৩৪টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তর হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। ১৫২টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ ছাড়াও ছয়টি উন্মুক্ত স্টল রাখা হয়েছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ মেলা।

ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। ছুটির দিন মেলা খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বইমেলা খোলা থাকবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় মেলার মূলমঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতাকে নিয়ে ২৫টি বই প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি। নতুন এসব বই নিয়েও আলোচনা হচ্ছে মঞ্চে। এছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 
Electronic Paper