ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ডিএসসিসিতে বিল সহকারীর দাপট

তোফাজ্জল হোসেন
🕐 ১০:১১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) রাজস্ব বিভাগের অঞ্চল-৪ এর লাইন্সেস সুপারভাইজার সোহেল রানা মামুনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগ, ঘুষ, দুর্নীতি ও বদলি বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এক ব্যক্তি তিন পদে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তার মূল ‘পদ’ বিল সহকারী। তাকে বর্তমানে হিসাব সহকারী ও বিজ্ঞাপন শাখায় বিধিবিহির্ভূত দায়িত্ব পালন করার সুযোগ দেওয়ার মূল হোতা ডিএসসিসির সংস্থাপন শাখার সহকারী সচিব আরশাদ আলী। একই ব্যক্তির নামে পৃথক তিনটি কক্ষ ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়ার বিষয় নিয়ে ডিএসসিসিতে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-৪ এর নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন, ঢাকার ৩৫ মিডফোট রোডের ব্যবসায়ী শামীম মোহাম্মদ। অভিযোগের এক মাস অতিক্রম হলেও সে ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

ডিএসসিসির কয়েকজন কর্মকর্তা খোলা কাগজকে বলেন, সিন্ডিকেট করে একক প্রভাব বিস্তার করে নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন সোহেল রানা। তার খুঁটির জোর কোথায়? এমন প্রশ্নের জবাবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, তার আত্মীয়স্বজন ঢাকা সিটি করপোরেশনে ক্ষমতাসীন দলের একটি অঙ্গসংগঠনের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে সোহেল রানা মামুনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলেই সে ফাইল গায়েব করা হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িত ওই দফতরে কর্মরত খলিল ও জামাল। ফাইল গায়েব করে দেওয়ায় অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা মিলছে না। মানুন তদবির করে খলিলকে মেয়রের দফতরে আর জামালকে নগরভবনের তৃতীয় তলায় সহকারী পদে বদলির সুযোগ করে দেওয়ায় এ দুজন তার হয়ে কাজ করছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সোহেল রানা মামুনকে বাঁচাতে সংস্থাপন বিভাগের সহকারী সচিব আরশাদ আলী পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করছেন। এ বিষয়ে আরশাদ আলী বলেন, তার নাম ভাঙিয়ে যারা এসব অপকর্ম করছেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, অভিযোগের বিষয়ে প্রধান সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত ২৯-১-২০২০ তারিখে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঢাকা দক্ষিণ সিটির সচিবকে মামুনের ব্যাপারে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বিষয়টি ডিএসসিতে কর্মরতদের মুখে মুখে ঘুরছে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী সচিব) মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তদন্ত করার জন্য নথি টেবিলে এসেছে, শিগগিরই তদন্ত শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত লাইন্সেস সুপারভাইজারসহ একাধিক পদধারী সোহেল রানা মামুন একাধিক পদের দায়িত্ব পালনের কথা স্বীকার করেছেন, তবে ঘুষ আর বদলি বাণিজ্যের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাকে ফাঁসানোর জন্যই এসব অভিযোগ করা হচ্ছে।

 
Electronic Paper