আদেশ প্রত্যাখ্যান করল মিয়ানমার
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:৪৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
রোহিঙ্গা নিধন নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার সরকার। গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আদালতে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিকৃত চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।’
আন্তর্জাতিক রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতিতে জানায়, ‘মিয়ানমারে গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশন রাখাইনে গণহত্যার কোনো প্রমাণ পায়নি। তবে সেখানে যুদ্ধাপরাধ হয়েছে, যা তদন্ত করা হচ্ছে এবং মিয়ানমারের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় এর বিচার হবে। মানবাধিকার কর্মীদের নিন্দার কারণে মিয়ানমারের সঙ্গে কিছু দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়ছে। ’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের সঙ্গে কিছু দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এ কারণে মিয়ানমারের টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
গতকাল মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন রায় ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক আদালত। খবর বিবিসির। গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক আদালতের ওই রায়ে রায়ে বলা হয়, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন চালিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং দেশটিতে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর এখনো চলছে নিপীড়ন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে মিয়ানমার সরকার।’ এ সময় মিয়ানমারের প্রতি তাদের সুরক্ষা দেওয়ারও আদেশ দেন আইসিজের বিচারক।
বিচারক অভিযোগ করে বলেন, মামলায় আদালতকে যথাযথ সহযোগিতা করেনি মিয়ানমার। এ সময় মামলা বাতিলের জন্য মিয়ানমার যে আবেদন করেছে সেটিও খারিজ করে দেন বিচারক।
বিচারক আবদুল কাওয়াই আহমেদ ইউসুফ জানান, এই মামলা নিয়ে মিয়ানমার যে আপত্তি করেছে সেটি গ্রহণযোগ্য নয়।
এ ছাড়া সামরিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেন কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডে না জড়ায় সেটি নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক আদালত।
তা ছাড়া আদালত অন্তর্বর্তীকালীন রায়ের অগ্রগতি সম্পর্কে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে মিয়ানমারকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য কী করা হয়েছে-ছয় মাস পর পর তা জানাতেও আদেশ দেন আদালত।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিশাল সামরিক অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা ওই রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
আইসিজে’র আদেশে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথ সুগম হবে : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) যে আদেশ দিয়েছেন সেটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট। এই আদেশকে সবাই স্বাগত জানিয়েছে। আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমারের বোধোদয় হবে এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথ অনেকটাই সুগম হবে।
শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কসবা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী। জেলার আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে অহেতুক অভিযোগ করা হচ্ছে। ভোটের প্রক্রিয়া সহজ করতে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন যন্ত্রের ব্যবহার বিভিন্ন দেশেই হয়ে থাকে। আসলে তারা চায় না ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন হোক।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়নি, দেউলিয়া বিএনপি হয়েছে। তারা সাজাপ্রাপ্ত ও খুনি। তারা এতিমের টাকা চুরি করেছে। অথচ বিএনপি নেতারা তাদের নেতা বদলাতে পারেন না।
শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে কসবা উপজেলা সমিতি ঢাকার সভাপতি প্রকৌশলী কবীর আহমেদ সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউছার ভূইয়া জীবন, পৌরসভার মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল, সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার জাহিদ ভূইয়া। অনুষ্ঠানের শেষে মন্ত্রী ২৫৬ জন মাধ্যমিক শিক্ষার্থীকে নগদ এক হাজার টাকা, সনদপত্র ও শিক্ষা উপকরণ দেন।
এ ছাড়াও ২৭ শিক্ষার্থীকে নগদ ৫ হাজার টাকা ও শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়।