প্রথম গ্রেড নিয়োগে কোটা থাকবে না
মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২০
নন-ক্যাডার অষ্টম গ্রেড থেকে উপরের অর্থাৎ প্রথম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকবে না। এসব পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। সোমবার নন-ক্যাডার অষ্টম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বণ্টন পদ্ধতি সংক্রান্ত পরিপত্র সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তেজগাঁর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। কোটা বাতিলের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের স্পষ্টকরণের জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) প্রস্তাব পাঠালে গতকাল সেই প্রস্তাব অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ে থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি নন ক্যাডার অষ্টম ও তদূর্ধ্ব গ্রেডের পদে সরাসরি নিযোগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে নাকি আগের কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে এ বিষয়টি স্পষ্টকরণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে। সেখানে বলা হয়, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হবে। নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩ম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো।
আগের মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটি ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশ জমা দেন। কমিটি নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা উঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাবটিই অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ২ জুলাই কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে সরকার। এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দেন।
আকাশ পথে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ছে
আকাশ পথে ভ্রমণ দুর্ঘটনা বা লাগেজ হারিয়ে গেলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ানো সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আকাশ পথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) আইন ২০২০-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নতুন আইন অনুযায়ী বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হলে বর্তমানে ক্ষতিপূরণে পরিমাণ ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে এক কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান রাখা হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) ২০২০ আইনের খসড়া, আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন ২০২০ এর খসড়া, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৯ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। এ ছাড়া ৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবসের পাশাপাশি জাতীয় ক্রীড়া দিবস উদযাপনের অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
তিন মাসে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৯৭ সিদ্ধান্ত
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গত বছর মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ প্রান্তিক বা শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বর) বৈঠক হয়েছে নয়টি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়েছে ৯৭টি এবং বাস্তবায়ন হয়েছে ৭৩টি। অর্থাৎ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার শতকরা হিসেবে ৭৫.২৬ শতাংশ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুটি নীতি এ কর্ম কৌশলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক হয়েছে পাঁচটি।