ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

যুদ্ধাপরাধ বিচারের কলঙ্ক মোচন

রবিউল ইসলাম
🕐 ৯:১৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনা সরকারের হাত ধরে চলছে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কাজ। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। অনেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। এর মাধ্যমে বিশাল কলঙ্কের দায় মোচন হয়েছে। দেরিতে হলেও গ্লানিমুক্ত হয়েছে জাতি।

বিভিন্ন সময়ে দেশে দেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইংলান্ড ও রাশিয়া পরাজিত জার্মান নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য নুরেমবার্গে স্থাপন করেছিল আন্তর্জাতিক সামরিক আদালত। সেখানে ১২ শীর্ষ সামরিক ও রাজনৈতিক নাৎসি নেতাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা বর্বর সেনাদের নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাঙালি নিধন চালিয়ে যায় তারা। ১৪ ডিসেম্বরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় জাতির সূর্য সন্তান সাহিত্যিক, অধ্যাপক, সাংবাদিক, শিল্পী, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, চিকিৎসকদের। শতাব্দীর অন্যতম জঘন্য এই অপরাধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে ছিল এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস, শান্তি কমিটির সদস্যরা।

১৬ ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়। এরপর থেকে একাত্তরে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি জনগণের। প্রণীত হয় ১৯৭২ সালের দালাল আইন এবং ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন। ১৯৭২-এ গঠিত হয়েছে দালাল আইনের অধীনে বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু পঁচাত্তর-পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতায় যুদ্ধাপরাধ বিচারের প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়ে।

১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ইস্যুটি আবার সামনে আসে। বিচারবিরোধী নানা চক্রান্ত নস্যাৎ করে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ গঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি প্রথম রায়ে আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ দিয়ে প্রথম রায় ঘোষণা করা হয়। এরপর একই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ এ মামলার চূড়ান্ত রায়ে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর কার্যকর করা হয়। এ পর্যন্ত ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। অন্যদের বিচারকাজ চলমান রয়েছে।

 
Electronic Paper