বেড়েছে নারীর ক্ষমতায়ন
নুরে রোকসানা সুমি
🕐 ৯:১০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতির প্রশ্নে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করার কোনো বিকল্প নেই। স্বাধীনতার ৪৯ তম বছরের পদার্পণ করেছে দেশ। এ ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতা বাড়ছে এবং নারী যোগ্যতাবলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে। এটা অগ্রগতির সূচকে অত্যন্ত ইতিবাচক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রেকর্ডসংখ্যক নারী নিবার্চনে দাঁড়াচ্ছেন, যা বৈশ্বিক রাজনীতির চেহারাও পাল্টে দিচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে অর্থনৈতিক কর্মকা-ে বেড়েছে নারীর অংশগ্রহণ। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও নারীরা নেতৃত্বের আসনে চলে এসেছে।
এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে নারীরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে এগিয়ে যাচ্ছে। নারী ক্ষমতায়নের এমন বিষয় অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপাটের্মন্টের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৮ কোটি ১৩ লাখ। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৯ কোটি ২ লাখ। অর্থাৎ অ্যাকাউন্টের ৯০ দশমিক ১২ শতাংশই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক মানুষের। ক্ষুদ্র অ্যাকাউন্টে জমা আছে আমানতের মাত্র ৬ শতাংশ এবং বৃহৎ অ্যাকাউন্টে জমা আছে আমানতের ৯৪ শতাংশ টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক নানা কর্মকাণ্ডে ফলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের সংখ্যার সঙ্গে বেড়েছে গ্রামীণ এলাকায় ক্ষুদ্র সঞ্চয়।
এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র সঞ্চয় বৃদ্ধির প্রভাবে নিশ্চিত হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন ও দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা। বিশ্লেষকরা বলছেন, নারীর ক্ষমতায়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে কাযর্কর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। দেশের সার্বিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি।
বর্তমানে অর্থনৈতিক সম্পদে নারীর অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে ঘটছে নারীর ক্ষমতায়ন। এ ছাড়া আর্থিক সেবায় ডিজিটাল পদ্ধতির প্রবর্তনের ফলে বিশেষত মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে নারীরা অধিক হারে প্রাতিষ্ঠানিক সেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এর ফলে গ্রামীণ অথর্নীতিতেও নারীর ক্ষমতায়ন ঘটছে লক্ষণীয়ভাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য সহায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিদের্শনা ও পরামর্শ দেওয়া ছাড়াও কিছু প্রণোদনা প্যাকেজ এবং পুনঃঅথার্য়ন স্কিম চালু করেছে এগুলো অব্যাহত রাখা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক। ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের ক্রমবধর্মান অর্থায়নের ধারা এ কার্যক্রমকে আরও বেগবান করেছে।
নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রেখে কাজ করলে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। মনে রাখতে হবে, মানুষের জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য একটি সুন্দর পৃথিবী গঠনে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার ভিত্তিতে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই।