ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ

মনির হোসেন
🕐 ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯

বিজয়ের ৪৯ বছরে পা রাখল বাংলাদেশ। এ সময়ে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ করেছে দেশ। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের পথে, তবে আরও বহু দূর পাড়ি দিতে হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে উন্নয়নশীল দেশ হবে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা এ তিনটি সূচকের দুটিতে উত্তীর্ণ হলে কোনো দেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।

এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা হিসেবে মাথাপিছু আয়ের মানদণ্ড ১২৩০ ডলার বা তার বেশি। বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় বর্তমানে ১ হাজার ৭৫১ ডলার।

মানবসম্পদ সূচকে যোগ্যতা নিরূপণের জন্য স্কোর ধরা হয় ৬৬ বা তার বেশি।

বাংলাদেশের স্কোর সেখানে ৭২ দশমিক ৮। আর অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের স্কোর ছিল ৩২ বা তার কম। বাংলাদেশের স্কোর ২৫। কয়েক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু হচ্ছে। বিদ্যুতে আলোকিত সমগ্র দেশ। এখন লাখ লাখ নারী পোশাক খাতে কাজ করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কর্মসূচিসহ শিশু মৃত্যু হার রোধেও সাফল্য প্রশংসনীয়। বেড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি)।

চার দশক আগে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, পর্যুদস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা, শূন্য খাদ্য ভাণ্ডার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও তিন লাখ বীরাঙ্গনার পুনর্বাসন, বৈরী আন্তর্জাতিক পরিবেশের মধ্যে শুরু হয়েছিল নতুন দেশের যাত্রা। নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর মূলে রয়েছে এ দেশের লড়াকু মানুষ।
১৯৭১ সালে হার না মানা মানুষের অপরাজেয় বিকাশের ফসল এই আর্থিক সাফল্য।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এসেছে বিশাল পরিবর্তন। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি বিদেশেও খাদ্য রপ্তানি করছে। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, যোগাযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈদেশিক সম্পর্কসহ সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন হয়েছে।

বিগত সাড়ে আট বছরে রাজধানীতে ছয়টি ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছে। উদ্বোধন করা হয়েছে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার।

এগিয়ে চলছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ। দৃশ্যমান হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল। কোনো চক্রান্তই থামাতে পারছে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন রথ। চার লেন মহাসড়ক, আট লেন মহাসড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, গ্যাস সংকট নিরসনে এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, প্রায় ছয় হাজার একর জায়গার ওপর গড়ে উঠা পায়রা সমুদ্রবন্দর, রাজধানীর চারপাশে স্যুয়ারেজ ট্যানেল নির্মাণের মতো অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।

উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে যোগ হয়েছে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প এবং দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম প্রকল্প। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কাজ চলছে। চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ সেবা দিতে শুরু করেছে।

 
Electronic Paper