হৃদরোগে বছরে মৃত্যু তিন লাখ
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
প্রতি বছরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে দুই লাখ ৭৭ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ, যা প্রতিরোধযোগ্য খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমে ট্রান্সফ্যাট নামক এক ধরনের চর্বিজাতীয় পদার্থ ধমনীর রক্তপ্রবাহ বন্ধ করে হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করে।
রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ট্রান্সফ্যাট নির্মূল করি, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাই’ শীর্ষক অ্যাডভোকেসি ক্যাম্পেইন উদ্বোধনকালে এ তথ্য জানানো হয়। ২০২৩ সালের মধ্যে ট্রান্সফ্যাটমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, প্রজ্ঞা এবং কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সাধারণত ভাজা-পোড়া ও বেকারি খাবারে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট থাকে। ভেজিটেবল অয়েল (পাম ও সয়াবিন) ইত্যাদির সঙ্গে হাইড্রোজেন যুক্ত করলে তেল জমে যায় এবং ট্রান্সফ্যাট উৎপন্ন হয়।
এ পার্শিয়াল হাইড্রোজেনেটেড অয়েল বা পিএইচও আমাদের দেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত। ভাজা-পোড়া খাদ্যে একই তেল উচ্চ তাপমাত্রায় এর পরিমাণ হওয়া উচিত মোট খাদ্যশক্তির ১ শতাংশের কম অর্থাৎ দৈনিক ২০০০ ক্যালরির ডায়েটে তা হতে হবে ২ দশমিক ২ গ্রামের চেয়েও কম। ট্রান্সফ্যাটের ব্যাপক স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে ডেনমার্ক বিশ্বে প্রথম ২০০৩ সালে খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ মাত্রা ২ শতাংশে নির্ধারণ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এখনও ৫০০ কোটি মানুষ শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণজনিত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, যাদের অধিকাংশই বাস করে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে।
এ পরিস্থিতির পরিবর্তনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৮ সালের রিপ্লেস অ্যাকশন প্যাকেজ ঘোষণা করে যেখানে ২০২৩ সালের মধ্যে শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটমুক্ত বিশ্ব অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ট্রান্সফ্যাট নির্মূল সংক্রান্ত কোনো নীতি না থাকায় খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের পরিমাণ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি রয়ে যাচ্ছে, যা হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।