রুম্পার শরীরে ধর্ষণের আলামত মেলেনি
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১:৪১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তে তার শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পায়নি ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রুম্পার মরদেহ ময়নাতদন্তে আমরা তিনটি টেস্ট করেছি। এর মধ্যে বায়োলজিক্যাল টেস্টের প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসেছে। এতে দেখা গেছে তার শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
আগামীকাল (রোববার) আরও দুটি প্রতিবেদনের রিপোর্ট হাতে আসবে। সব পেলে তিনটা মিলে একটা প্রতিবেদন তৈরি করে আমরা পুলিশের কাছে জমা দেব।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে অজ্ঞাত মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হত্যার আলামত সংগ্রহ করেন। সুরতহালে পুলিশ গুরুতর কিছু ইনজুরি পায়। সংগৃহীত আলামত ফরেনসিকে পাঠায়। ওই ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করে।
ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ জানান, নিহত তরুণীর হাত, পা, কোমরসহ শরীরের কয়েক জায়গায় ভাঙা ছিল।
ঘটনার ছায়া তদন্ত করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি দক্ষিণ বিভাগ)।
ডিবি দক্ষিণের উপ-কমিশনার (ডিসি) রাজিব আল মাসুদ বলেন, ঘটনাটি চাঞ্চল্য ছড়ানোর পর ছায়া তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগ। আসলে সুইসাইড নাকি, হত্যা সেটা আগে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। তাছাড়া অন্যান্য আলামত পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর স্পষ্ট হবে মোটিভ।
এরই মধ্যে রুম্পার কথিত প্রেমিক আবদুর রহমান সৈকতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপর তাকে রিমান্ডেও নেয়া হয়।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, রুম্পা-সৈকতের সম্পর্কের ইতি টানতে চেয়েছিলেন সৈকত। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সৈকত তার সহযোগীদের নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর সেই বাসার ছাদে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে তাকে ওই ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
অন্যদিকে রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, যে স্থান থেকে মরদেহ আমরা উদ্ধার করেছি, তার আশপাশের কোনো ভবনে থাকত না নিহত রুম্পা। রুম্পা থাকত শান্তিবাগে। স্বভাবত, সন্দেহ জোরালো হয় যে, রুম্পা হত্যার শিকার হয়েছেন। তবে সেটাও তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষ। রুম্পাকে হত্যার পর এখানে আনা হয়েছে, নাকি কোনো ভবন থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে অথবা উপর থেকে সে সুইসাইড করার উদ্দেশে লাফিয়ে পড়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। কিন্তু তাতে বিশেষ সাহায্য পাইনি। ঘটনা সংশ্লিষ্ট ফুটেজ মেলেনি। তবে ঘটনা জানার চেষ্টা করছি। কাউকে আটক না করলেও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আশা করছি, খুব দ্রুত পুরো ঘটনাটা স্পষ্ট হবে।