ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ক্ষতিপূরণ আদায় হচ্ছে ফেসবুক গুগল থেকে

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১:০৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯

ব্যক্তিগত তথ্য যাতে বেহাত না হয়, বেহাত হলেও কেউ যাতে কোনো ক্ষতি করতে না পারে বা ক্ষতি করলেও যাতে ক্ষতিপূরণ আদায় সহজ হয়- সেজন্য ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে সার্ভের কাজ শেষ হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এখন প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই খসড়া তৈরির কাজ শুরু হবে। ব্যবহারকারীরা ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবসহ অন্য মাধ্যম ব্যবহারের সময় (বিশেষ করে আইডি তৈরির সময়) যেসব ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে থাকেন তা নিরাপদ রাখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কোম্পানির। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, ওই প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যক্তির সেসব তথ্য বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে বা অর্থের বিনিময়ে তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেয়। এ অভিযোগ ফেসবুকের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি।

অভিযোগ রয়েছে, ফেসবুক থেকে প্রায় ৯ কোটি গ্রাহকের তথ্য ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে যায়। গুগলের বিরুদ্ধেও আছে এমন অভিযোগ। উন্নত দেশগুলোতে ব্যক্তির এসব তথ্য উদ্ধার বা তথ্যর অপব্যবহারের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে আইন থাকলেও আমাদের দেশে নেই। এসব প্রতিষ্ঠান যদি দেশের মানুষের কোনো তথ্য চুরি করে বা তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছে বিক্রি করে তাহলে তাদের ধরা কঠিন। ওইসব প্রতিষ্ঠানের এ দেশে নিবন্ধিত কোনো অফিসও নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবং কাজও অনেক দূর এগিয়েছে। আমরা একটা সার্ভে করেছি। তাতে দেখা গেছে পৃথিবীর ৯০ ভাগ দেশ ডাটা সিকিউরিটি আইন করে ফেলেছে।

এতে করে সংশ্লিষ্ট দেশের জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিতে উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়েছে। যার সর্বশেষ নজির সিঙ্গাপুর। এরই মধ্যে আমরা টেলি যোগাযোগ বিভাগকে বলে দিয়েছি, পৃথিবীর সব আইন (তথ্য সুরক্ষা আইন) পর্যালোচনা করে একটা রিপোর্ট তৈরি করতে। পরে সংশ্লিষ্টদের দিয়ে খসড়া তৈরি করে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানো হবে।

তিনি বলেন, কেউ তার ব্যক্তিগত তথ্য যতটকু প্রয়োজন ততটুকু দেবেন। রাষ্ট্র ঠিক করে দেবে ব্যক্তি তার তথ্য কতটুকু প্রকাশ করবে। ডাটা প্রটেকশন না থাকলে কোনও প্রাইভেসি থাকবে না। এই আইন না থাকায় আমরা ফেসবুক, ইউটিউবকে ধরতে পারছি না। আইনে আছে, পাবলিশারের কোনো দায়িত্ব নেই। অপ-তথ্যের কারণে ব্যক্তিকে ধরা হলেও পাবলিশার হিসেবে ফেসবুকের কোনও দায়িত্ব নেই, শাস্তি নেই। ফেসবুক কেন দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারবে? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আছে ক্ষতিপূরণ সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা। ফেসবুক, ইউটিউব যে মানের প্রতিষ্ঠান তাতে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কিছুই নয়। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনে এসব অনেক বাড়াতে হবে যাতে এগুলো দেশের মানুষের কাছে, সরকারের কাছে আইনিভাবে দায়বদ্ধ থাকে। আমরা এর খসড়া তৈরি করে মন্ত্রিসভায় পাঠাব। কাজ শুরু হয়েছে।

তথ্য-প্রযুক্তিবিদ ও উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্প ‘আমাদের গ্রাম’ এর পরিচালক রেজা সেলিম বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকার অংশের ৪৩খ অনুচ্ছেদে ‘আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে’ নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার সংরক্ষণের কথা বলা আছে। কিন্তু আমাদের এখনও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বা ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্যে নির্দিষ্ট আইন নেই।

আইনের চেয়েও জরুরি এ বিষয়ে জনসচেতনতা, সেটিও নেই। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই আমরা বুঝতে পারছি না কখন কোথায় কেমন করে আমার ব্যক্তিগত তথ্য, যা অন্যের জানা দরকার নেই, চলে যাচ্ছে ভুল পথে। আর এর ফলে আমরা বুঝতে পারছি না যে, আমরা যেকোনও সময়ে একটি বিপদে পড়তে পারি বা আমার ব্যক্তিগত তথ্যের অপ-প্রয়োগ করে আমাকে কেউ বিপদেও ফেলতে পারে।

 
Electronic Paper