দুর্নীতির অর্থ জমি-ফ্লাটে
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:০০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
বাংলাদেশে প্রতি বছর দুর্নীতির মাধ্যমে কি পরিমাণ অর্থ আয়-রোজগার করা হয়, তার সঠিক কোনো তথ্য-উপাত্ত কারও কাছে নেই। সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্নীতি নিয়ে যেসব সরকারি-বেসরকারি সংস্থা কাজ করে, তাদের ধারণা এই সংখ্যা লাখো-কোটি টাকার কম নয়। তবে দুর্নীতির অর্থে ব্যক্তি লাভবান হলেও সেসব অর্থ দেশ বা সমাজের কোনো কাজে লাগছে না।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এসব অর্থের বড় অংশই জমি ও ফ্লাট ক্রয় করা হয়। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হচ্ছে সেবা খাতের দুর্নীতি, ঘুষ হিসাবে যেটি বর্ণনা করা যায়। আরেকটি হলো বড় ধরনের দুর্নীতি, যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় কেনাকাটার অপব্যবহার। সেখানে রাজনৈতিক নেতা, আমলা, ব্যবসায়ীরা জড়িত থাকেন।’
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের গবেষক নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘অবৈধভাবে উপার্জিত অবৈধ আয়ের একটি অংশ দেশের ভেতরেই থাকে, আরেকটি অংশ নানাভাবে দেশের বাইরে পাচার হয়ে যায়। এসব টাকা-পয়সার বড় অংশ খরচ হয় ফ্ল্যাট বা জমি কেনার পেছনে। অনেক সময় এসব সম্পত্তি কেনা হয় স্ত্রী, সন্তান বা স্বজনদের নামে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারিভাবেও বাজেট ঘোষণার সময় ‘কালো টাকা’ বলে পরিচিত এসব অবৈধ অর্থ আবাসন খাত বা শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ করার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশের ভেতরে থাকা দুর্নীতির বেশির ভাগ অর্থ জমি এবং ফ্ল্যাট ক্রয়ে ব্যয় হয়। বিদেশেও এভাবে অর্থ সরিয়ে নিয়ে অনেকেই দ্বিতীয় একটি ঠিকানা তৈরি করছেন। বিদেশে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বা চিকিৎসার নামেও অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে। স্বর্ণালঙ্কার, মূল্যবান সামগ্রী ক্রয়, ব্যবসায় বিনিয়োগ ইত্যাদি খাতেও খরচ দেখানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে আমদানি, রপ্তানি, হুন্ডি এবং সেকেন্ড হোমের নামে গোপনে অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বলছে, বিদেশি ব্যাংকে যাওয়া এসব অর্থের তথ্য সহজে পাওয়া যায় না। সঠিক তথ্যের অভাবে মামলা করা যায় না।