ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বায়ুদূষণে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট ক্যান্সার হৃদরোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১২:১৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯

ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বায়ুদূষণের মাত্রা। এতে বাচ্চাদের স্বল্প ও দীর্ঘস্থায়ী রোগব্যাধি হয়। সর্দি, কাশি, জ্বর, ব্রঙ্কাইটিস এগুলো স্বল্পস্থায়ী রোগ। যাদের অ্যাজমা আছে, এ সমস্যাটা বাড়ে। বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার, হৃদরোগ, লিভার ও কিডনিতে জটিলতা বাড়তে পারে। গর্ভবতী মা বায়ুদূষণের শিকার হলে গর্ভের সন্তানের ওপর তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ফলে বাচ্চা আকারে ছোট হতে পারে, ওজন কম হতে পারে, মানসিক ও স্নায়ুগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। অটিস্টিক বাচ্চা জন্ম হওয়ার একটি কারণ বায়ুদূষণ।

সাধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়ে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। সবচেয়ে বেশি দূষণ থাকে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু গত দুই বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, মার্চ ও এপ্রিলের বাতাসও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মতো খারাপ থাকছে। এদিকে বায়ুদূষণজনিত রোগে দেশে কত সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন-তার কোনো সরকারি পরিসংখ্যান নেই। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণজনিত রোগ বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকির শিকার গর্ভবতী মা ও শিশুরা। অটিস্টিক শিশুর জন্ম হওয়ার একটি কারণ দূষিত বায়ু। বাচ্চাদের জন্মকালীন ওজন কম হওয়ার একটি কারণও বায়ুদূষণ। বায়ুদূষণের কারণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। হাঁচি-কাশি, ব্রঙ্কাইটিস, শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে হতে পারে ফুসফুসের ক্যান্সার। এ ক্যান্সারের বড় কারণ দূষিত বায়ু। এ ছাড়া কিডনি ও হৃদরোগের কারণও হতে পারে বায়ুদূষণ।

পরিবেশ অধিদফতরের বায়ুমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যে দেখা যায়, গত চার বছর ধারাবাহিকভাবে দূষণের সময় বা দিন বাড়ছে। সাধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়ে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে। সবচেয়ে বেশি দূষণ থাকে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু দুই বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, মার্চ ও এপ্রিলের বাতাসও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মতো খারাপ থাকছে।

জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক শাহেদুর রহমান খান বলেন, কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, শীতের সময় ছাড়া অন্য সময়েও রোগী বাড়ছে। এখন প্রতিদিন গড়ে ৮০০ থেকে এক হাজার রোগী আসছেন বহির্বিভাগে। পাঁচ বছর আগে গড়ে প্রতিদিন ২০০-৩০০ জন রোগী আসতেন। তিনি বলেন, বায়ুদূষণের কারণে নানা ধরনের রোগব্যাধি হয়। প্রাথমিকভাবে হাঁচি, কাশি, নাক-চোখে জ্বালা হতে পারে। বক্ষব্যাধির অনেক রোগ পৃষ্ঠা ১১ কলাম ৭
বায়ুদূষণে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট

বায়ুর সঙ্গে সম্পৃক্ত। বোঝা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে রোগী বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ বায়ুদূষণ। এ সময়টাতে বিশেষ করে শহরে ধুলাবালু বেড়ে যায়, বায়ুদূষণ বাড়ে।

বায়ুদূষণ অকালমৃত্যু ডেকে আনার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বছরে বিশ্বব্যাপী ৭০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু হয় বায়ুদূষণজনিত রোগে। এসব রোগের মধ্যে আছে হৃদরোগ, স্ট্রোক, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুস ক্যান্সার এবং বাচ্চাদের তীব্র শ্বাসকষ্ট।

দ্য চেস্ট অ্যান্ড হার্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মির্জা মোহাম্মদ হিরণ বলেন, অ্যাজমার রোগী ক্রমে বাড়ছে। এখন দেশে প্রায় ৭০ লাখ অ্যাজমা রোগী আছে। তিনি বলেন, বায়ুদূষণের কারণেই অ্যাজমা হয় এমন নয়, তবে বায়ুদূষণ অ্যাজমা সমস্যা প্রকট করে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের অ্যাজমা সেন্টারে প্রতিদিন বাড়ছে রোগী। শিশু হাসপাতালের পরিচালক সৈয়দ সফি আহমেদ বলেন, বৈশ্বিক বায়ুদূষণের ঝুঁকিবিষয়ক ‘দ্য স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের যে পাঁচটি দেশের শতভাগ মানুষ দূষিত বায়ুর মধ্যে বসবাস করে, তার একটি বাংলাদেশ। বায়ুদূষণজনিত মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ পঞ্চম। এ কারণে ২০১৭ সালে দেশে মারা গেছে এক লাখ ২৩ হাজার মানুষ।

 
Electronic Paper