তালিকায় ১৫৯ দুর্নীতিবাজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২১, ২০১৯
দীর্ঘ হচ্ছে দুর্নীতিবাজের তালিকা। এ পর্যন্ত ১৫৯ জনের একটি তালিকা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। সামনে তালিকাটি আরও দীর্ঘ হবে। তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুদকের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলেক্ষে গতকাল বুধবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব তথ্য দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবে দুদক। ২০০৪ সালের এই দিনে যাত্রা শুরু করে সংস্থাটি।
দুদকের বর্তমান কার্যক্রম তুলে ধরে ইকবাল মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক চার শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। সংখ্যাটা কম নয়। আর ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ঘটনাও গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা তাদের বিষয়ে জানতে চাই। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে তথ্য চেয়েছি। তথ্য পাওয়ার পর এ নিয়ে পর্যালোচনা হবে। যাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমাদের তৈরি করা তালিকাও মিলিয়ে দেখা হবে। সব কাজ দুদক সমন্বিতভাবেই করতে চায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ব্যক্তির রাজনৈতিক, সামাজিক বা পেশাগত পরিচয় দুদকের কাছে বিবেচ্য বিষয় না। কেউ যদি সংবিধান লঙ্ঘন করে কালোটাকা বা অবৈধ সম্পদ অর্জন বা পেশিশক্তি ব্যবহার করে জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তাহলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সরকারের চলমান ‘শুদ্ধি অভিযান’ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতিবিরোধী যেকোনো অভিযানকেই স্বাগত জানায় দুদক। তবে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক তার নিজস্ব পন্থাতেই কাজ করছে। যারাই দুর্নীতি করবে তাদেরই জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। অনিয়মকে যারা নিয়ম বানাতে চায় তাদের ছাড় নেই বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে দাবি করে ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, সফলতা যেমন আছে, তেমনি ব্যর্থতাও আছে। সীমাবদ্ধতার কারণে হয়তো কাক্সিক্ষত মাত্রায় সফলতা আসেনি। এরপরও প্রাপ্তি একেবারে কম নয় বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে উদাহরণ টেনে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের মামলার কারণে সাড়ে তিন বছরের খেলাপি ঋণের ১৫ হাজার কোটি টাকা ফেরত এসেছে। এ রকম আরও অনেক ঘটনা আছে উল্লেখ করার মতো। দুর্নীতিবাজরা পার পায়নি।
দুদকের কাজের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলেই তাকে নোটিস পাঠায় না দুদক, খতিয়ে দেখে। অনেক অভিযোগ ভিত্তিহীনও প্রমাণ হয়।
আমরা যথেষ্ট খোঁজখবর নিয়ে কাজ করছি। আমাদের কর্মকর্তারা প্রয়োজনে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার কাছেও যাচ্ছেন। সবকিছু ত্রুটিমুক্তভাবে করার চেষ্টা হচ্ছে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এটি একটি প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত করতে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- যদি মামলা হয় তাহলে চার্জশিট পর্যন্ত যেতে হবে। যার বিরুদ্ধে মামলা তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
দুর্নীতিবাজদের খোঁজ পেতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে মন্তব্য করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত প্রতিবেদন আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখি। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।