মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা
শুনানি ডিসেম্বরে
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:১৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০১৯
মিয়ানমারের ভূমিপুত্র রোহিঙ্গাদের গণহত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলা শুনানির জন্য আগামী ডিসেম্বরে উঠবে বলে ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে। দি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) গত সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এই মামলার শুনানি করা হবে। এএফপির বরাতে ডয়েচে ভ্যালে গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদন বলছে, আফ্রিকার মুসলিম অধ্যুষিত দেশ গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য জরুরি আদেশ দিতে বলবে। দেশটির আইনজীবীরা জানান, তারা চান রোহিঙ্গাদের যেন আর কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য যেন আইসিজে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের গণহত্যা-নির্যাতনের দায়ে গত ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের দি হেগের আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। ইসলামি কো-অপারেশনের ৫৭টি দেশের পক্ষে তারা এই মামলা করেছে। সেখানে মিয়ারমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা প্রতিরোধ ও এর শাস্তি বিধানে ১৯৮৪ সালে স্বাক্ষরিত কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
১৯৫৬ সালে ওই জেনোসাইড কনভেনশনে সই করে মিয়ানমার। এছাড়া দেশটির বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের বাড়িঘর ধ্বংসের কথাও বলা হয়।
জাতিসংঘের প্রধান বিচারিক অঙ্গ আইসিজে হলো ১৯৪৫ সালে সংগঠনটি গঠনের পরের বছর থেকে এই আদালত কার্যকর রয়েছে। রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় আনতে ১০টি সংগঠন গাম্বিয়াকে সহায়তা করছে, তাদের একটি হলো হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
এইচআরডব্লিউর পরিচালক পরমপ্রিত সিং এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গাম্বিয়ার এই আইনি পদক্ষেপের ফলে বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হলো। এখন আদালত রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচাতে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা নিতে পারে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় বিদ্রোহীদের হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। তখন বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা চলে আসে। গত দুই বছরে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহতা ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে আখ্যায়িত করে জাতিসংঘ।