ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রবল আকার নিচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’, তীরে ভিড়ছে সব নৌযান

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ০৮, ২০১৯

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বুলবুল’। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। সাগর উত্তাল থাকায় তীরে ভিড়ছে সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে এ ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। এ ঝড় স্থলভাগে আঘাত হানবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে ভারতের পূর্বাভাস বলছে, প্রবল থেকে অতিপ্রবল হতে পারে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দফতরের নির্ধারিত তালিকা থেকে ধারাবাহিকভাবে এই অঞ্চলের ঝড়ের নাম দেওয়া হয়। ‘বুলবুল’ নামটি নেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি গত বুধবার রাতে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। এরপর উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে এসে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ওই সময় নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঝড়টি কবে নাগাদ উপকূলে আঘাত হানবে, বাংলাদেশ উপকূলে কতটা প্রভাব পড়বে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিক গতিপথ থেকে মনে হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বাংলাদেশের দিকে নাও আসতে পারে।’

এদিকে ভারতের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল শুক্রবার (আজ) বিকালে আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হতে পারে। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। এরপর শনিবার বিকালে বুলবুল পরিণত হতে পারে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম)।

তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার হতে পারে। এরপর এ ঝড় উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে বাঁক নিতে শুরু করতে পারে। সেই সঙ্গে কমে আসতে পারে এর বাতাসের শক্তি। ১০ অক্টোবর অতি প্রবল থেকে আবার প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বুলবুল। বাংলাদেশের পটুয়াখালী উপকূলের কাছাকাছি সাগরে পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুর্বল হয়ে যাবে বুলবুল।

 
Electronic Paper