ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থায় নতুন পদ্ধতি ‘এফজিএমও’

সৈয়দ ফয়সাল
🕐 ১০:২৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৭, ২০১৯

দেশের উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন করে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার (এলএনডিসি)। আর এই এলএনডিসিকে আধুনিকায়ন করতে নতুন এক উদ্যোগ নিচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ যা ফ্রি গভর্নিং মুড অব অপারেশন বা এফজিএমও পদ্ধতি নামে পরিচিত। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং পাওয়ার গ্রিড অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এই পদ্ধতির মাধ্যমে এনএলডিসিকে আধুনিক করার উদ্যোগ নিয়েছে।

বর্তমানে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের বেশিরভাগ কাজই ম্যানুয়ালি অর্থাৎ মানুষের মাধ্যমে করা হয়। যা ঝুঁকিপূর্ণ এবং একই সঙ্গে সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। এফজিএম বাস্তবায়ন করতে পারলে সঞ্চালন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে এবং পুরো প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলবে। এতে করে এক জায়গাতে অর্থাৎ এলএনডিসিতে বসেই বিদ্যুতের সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

এফজিএমওতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি থাকবে, যা ৪৯ থেকে ৫০ দশমিক পাঁচ হার্জের মধ্যে থাকবে। এলএনডিসি প্রতিদিনের জন্য চাহিদা নির্ধারণ করবে এবং সেই চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর এই চাহিদা ও উৎপাদনের একটি স্বয়ংক্রিয় পর্যালোচনা হবে। এতে করে সারা দেশে এক সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া বা ব্লাক আওটের মতো ঘটনা ঘটবে না। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এই পদ্ধতিতে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা যাবে। পিজিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, দেশে সব মিলিয়ে ২০ হাজার মেগাওয়াটের ওপরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। শহর এবং গ্রামে লোডশেডিং হচ্ছে নিয়মিত। অথচ পর্যাপ্ত উৎপাদন থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত লোডশেডিং হচ্ছে। এক্ষেত্রে আধুনিক সঞ্চালন ব্যবস্থা না থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টদের মতে, এনএলডিসিকে আধুনিকায়ন করার প্রয়াস থাকলেও বিদ্যুতের সঞ্চালন এবং বিতরণ ব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, সরকার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পক্ষে। সঞ্চালন ব্যবস্থা আধুনিকায়নে এফজিএমও বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য একটি অ্যাকশন প্লান করা হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র মতে, বাংলাদেশ সম্প্রতি ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানির প্রস্তাব দেয়। অথচ ভারতের সঞ্চালন ব্যবস্থা বাংলাদেশ থেকে অনেক উন্নত এবং তারা ফ্রিকোয়েন্সি সঠিকভাবে ও গ্রিড কোড মেনে সঞ্চালন করে। এক্ষেত্রে, দেশে এসব বিষয়ে ঘাটতি থাকায় ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানিতে যথেষ্ট সমস্যা হতে পারে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গ্রিডের উন্নয়ন জরুরি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পিজিসিবি সূত্র মতে, যথাযথভাবে ফ্রিকোয়েন্সি না মানার কারণে সঞ্চালন ব্যবস্থা ঝুঁকিতে থাকে। সতর্ক থাকার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও সঠিকভাবে মানা হয় না। আবার বিদ্যুৎ বিতরণে সঠিক গ্রিড কোডও মানা হয় না।

গত রোববার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর আফতাবনগরে এলএনডিসি কার্যালয়ে এ বিষয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এবং পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন। এছাড়া পিজিসিবি ও পিডিবির কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে এনএলডিসিতে এফজিএমও পদ্ধতি বসানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

 
Electronic Paper