প্রভাবশালী নারীর তালিকায় রোহিঙ্গা তরুণী জেসমিন
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:১৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০১৯
এ বছর বিশ্বে অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা পরিবারের সন্তান জেসমিন আখতার। বিবিসি এ তালিকা প্রকাশ করে।
রোহিঙ্গা নারী জেসমিনের জন্ম বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে। জন্মের কিছু আগেই তার বাবা মারা যান। এরপর শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে যান তিনি। ব্রিটেনে যাওয়ার পর ক্রিকেট খেলায় বিশেষ পারদর্শিতা দেখান জেসমিন। ব্র্যাডফোর্ড শহরে জেসমিন ও তার বন্ধুরা মিলে শুধু এশীয় বংশোদ্ভূত মেয়েদের একটি ক্রিকেট দল গড়ে তোলেন। এ বছর প্রথম স্ট্রিট চাইল্ড ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ নামে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়। সেবামূলক উদ্দেশ্যে চালু করা এ টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড় হিসেবে মনোনীত হন জেসমিন।
তিনি বলেন, মুক্ত মানুষ হিসেবে প্রতিটি নিঃশ্বাস আপনাকে আরও বেশি আনন্দ দেয়। সেই অনুভূতি কেমন তা আমি জানি।
এ তালিকায় আরও স্থান পেয়েছেন ভারতশাসিত কাশ্মীরের মানবাধিকারকর্মী পারভীনা আহাঙ্গার, ইরানের অ্যাথলেট কিমিয়া আলিজাদেহ, সুইডেনের জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী আন্দোলনকারী গ্রেটা থানবার্গ এবং রাশিয়ার দুর্নীতিবিরোধী কর্মী লিউবভ সোবোল।
পারভীনা আহাঙ্গার, মানবাধিকারকর্মী
পারভীনাকে ডাকা হয় ভারতশাসিত কাশ্মীরের আয়রন ‘লেডি’ বলে। ১৯৯০ সালে কাশ্মীরে ভারতের শাসনের বিরুদ্ধে যখন গণঅভ্যুত্থান তীব্র আকার নিয়েছিল, সেই সময় পারভীনার ছেলে নিখোঁজ হয়ে যায়। পারভীনা তখন একটি সংগঠন গড়ে তোলেন এপিডিপি নামে। যেটি হচ্ছে নিখোঁজ মানুষের বাবা-মায়েদের একটি সমিতি। আগামী বছর পারভীনার ছেলের নিখোঁজ হওয়ার ৩০তম বার্ষিকী।
পারভীনা বলেন, তিনি এখনো তার ছেলেকে আবার দেখতে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেননি। ছেলেকে হারানোর সেই শোকই তাকে বিচার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করে। আমি পৃথিবীকে অপেক্ষাকৃত ভালো একটি জায়গায় পরিণত করতে চাই, বিশেষ করে নারীদের জন্য। আজকের দুনিয়ায় নারী ইস্যুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক, বিশেষ করে যুদ্ধ-সংঘাতপূর্ণ এলাকায় যারা বাস করছেন সেই সব নারীর স্বার্থে।
কিমিয়া আলিজাদেহ, ইরান অ্যাথলেট
কিমিয়া আলিজাদেহ হচ্ছেন প্রথম অলিম্পিক পদক জেতা ইরানি নারী। ইরান ১৯৪৮ সাল থেকে অলিম্পিক গেমসে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু তায়েকানডোতে কিমিয়া পদক জেতার আগে দেশটির কোনো নারী অ্যাথলেটিক্সে পদক জেতেননি। ইরানী নারীর ব্যক্তিগত স্বাধীনতার গ-িকে সম্প্রসারিত করার ক্ষেত্রে সাহস জুগিয়েছে কিমিয়ার দৃষ্টান্ত।
গ্রেটা থুনবার্গ, সুইডেন জলবায়ু পরিবর্তন রোধের আন্দোলনকারী
গত বছর আগস্ট মাসে ১৫ বছরের স্কুলবালিকা গ্রেটা থুনবার্গ স্কুল বর্জন করে সুইডিশ পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ করে। সেই একজনের বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। যাতে লাখ লাখ কিশোর-তরুণ যোগ দেয়।
লিউবভ সোবোল, রাশিয়ার দুর্নীতিবিরোধী কর্মী
লিউবভ একজন আইনজীবী, যিনি রাশিয়ায় কথিত দুর্নীতির তদন্ত করেন। সামাজিক মাধ্যম বা ইউটিউবের ভেতর দিয়ে তার কাজ দেখে থাকেন ১০ লাখেরও বেশি লোক।
এ বছর গ্রীষ্মকালে তিনিসহ বেশ কয়েকজন বিরোধীদলীয় প্রার্থীকে মস্কোর স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। যার প্রতিবাদে হাজার হাজার লোক বিক্ষোভ করে। লিউবভ সোবোল বলেন, আমি ভবিষ্যতের কথা ভাবি না, আমরা যে দেশে থাকি, সেখানে যে কোনো কিছুই ঘটতে পারে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আমরা জয়ী হব, রাশিয়া হবে মুক্ত ও সুখী একটি দেশ।