জাতিসংঘ প্রতিনিধিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আবরার হত্যা নিয়ে মন্তব্য অনাকাঙ্খিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৯
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘ ঢাকা অফিসের দেওয়া বিবৃতি অনাকাঙ্খিত বলে মন্তব্য করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারের অন্তোষ ও বিরক্তির কথাও জানানো হয়েছে।
গতকাল রোববার সকালে জাতিসংঘ আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পোকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার মনে করে জাতিসংঘ বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনার বিষয়ে জাতিসংঘ প্রতিনিধির বিবৃতি দেওয়া অনভিপ্রেত ও অনাকাক্সিক্ষত। আবাসিক প্রতিনিধিকে এ কথাই জানানো হয়েছে।
এদিন সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালক নাহিদা সোবহান জাতিসংঘ আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পোকে মন্ত্রণালয়ে তলব করেন। বেলা ১১টার দিকে মিয়া সেপ্পো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন। তিনি প্রায় ৪০ মিনিটের মতো সেখানে অবস্থান করেন। নাম প্রকাশ না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের ঢাকা অফিস যে বিবৃতি দিয়েছিল, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে আবাসিক প্রতিনিধির কাছে।
এবার মুজাহিদের স্বীকারোক্তি, মোয়াজ-শামীম রিমান্ডে
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা বুয়েটছাত্র মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়াও আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
গতকাল রোববার বুয়েটের ট্রিপল-ই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুজাহিদকে আদালতে হাজির করা হলে মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এই আদালতের পেশকার জাহিদ হাসান বলেন, ‘মুজাহিদ অপরাধের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।’
এই হত্যা মামলায় এর আগে বুয়েটছাত্র ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন ও অনিক সরকার আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়াও ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে বুয়েটের ১১ জনকে বহিষ্কার করেছে। আর আবরারের বাবা যে ১৯ জনের নামে মামলা করেছেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। আবরার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত কয়েক দিনে মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই পক্ষের আইনজীবীরা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে রিমান্ড বাতিল চেয়ে শামীমের পক্ষে আইনজীবী ফকির আব্দুল মজিদ ও মোয়াজের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামরুল হোসেন জামিন আবেদনের শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ) জামিন বাতিল করে রিমান্ড চান। উভয়পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আদালত আসামিদের কিছু বলার আছে কি-না জানতে চাইলেও আসামিরা কোনো কথা বলেননি। এরপর আসামিদের পাঁচদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সাতক্ষীরা হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় শামীম বিল্লাহকে এবং গত শনিবার সকাল ১১টায় মোয়াজকে উত্তরা ১৪ নম্বরের একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।