ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন

গণহত্যার অভিপ্রায়ে ধর্ষণ

ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১০:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৩, ২০১৯

সংখ্যালঘু মুসলমানদের নির্মূল করতে গণহত্যার অভিপ্রায় থেকেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের ধর্ষণ করে। এ সময় শত শত রোহিঙ্গা নারী ও মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তথ্য প্রমাণ বলছে, ধর্ষণের ৮০ শতাংশ ঘটনাই ইচ্ছা করে ঘটানো হয়েছে। সংঘটিত ৮২ শতাংশ গণধর্ষণের দায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মিয়ানমার সেনার অভিযান শুরু হয়। প্রাণ বাঁচাতে সেখানকার প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পালিয়ে আসা ওই সব রোহিঙ্গার অনেকেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বা শরীরে পোড়া ক্ষত নিয়ে আসেন। নারীদের শরীরে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার চিহ্ন স্পষ্ট ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকেই রাখাইনে নারী ও মেয়েদের ওপর যৌন সহিংসতা শুরু হয়ে গিয়েছিল। মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করতেই সেখানে গণধর্ষণ চালায়। যুক্তিসংগত ভাবেই একে গণহত্যার ষষ্ঠ প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে আমরা আমাদের প্রতিবেদনের ইতি টানছি।’

এতে আরও বলা হয়, ‘বিপুল সংখ্যায় এবং বেছে বেছে নারী ও মেয়েদের হত্যা, সন্তান জন্মদানে সক্ষম নারীদের ধর্ষণ, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ছোট শিশুদের ওপর আক্রমণ, নারীদের ক্ষতবিক্ষত যৌনাঙ্গ, বিশেষ করে গাল, গলা, স্তন ও ঊরুতে কামড়ের দাগ দেখে তদন্ত কর্মকর্তারা এই উপসংহারে পৌঁছেছেন।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে ‘প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মিয়ানমার সরকার এ গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত কাউকে আটক করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত এর জন্য দায়ী কোনো সেনা কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় আনা হয়নি। এর মাধ্যমে মিয়ানমার সরকার জঘন্যভাবে নিজেদের দায় অস্বীকার করেছে। জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে দুই শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্তের আহ্বান জানানো হলেও তারা এখনো স্বদর্পে নিজেদের পদে বহাল আছেন। অভিযুক্তদের জেনোসাইড কনভেনশনের অধীনে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানে ব্যর্থতার দায় মিয়ানমার সরকারের।’

এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রকৃত অবস্থা পর্যবেক্ষণ সুযোগ তারা কাউকে দেয়নি। এমনকি জাতিসংঘের তদন্ত দলকেও রাখাইন রাজ্যে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। যে কারণে তদন্ত কর্মকর্তারা বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির, বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা, উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান, গবেষক এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে এই তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

 
Electronic Paper