ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ডিবিএমের বাজেট মূল্যায়ন মুক্তিযুদ্ধের দর্শনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৫, ২০১৯

বাজেট হয় দেশের উন্নয়নের জন্য। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য। কিন্তু সংসদে যে বাজেট পেশ করা হয়েছে তা ধনীক শ্রেণি ও ব্যবসায়ীবান্ধব। এখানে শ্রমিকদের জন্য কিছু নেই। কৃষকের জন্য বরাদ্দ নেই। শিক্ষার উন্নতির জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। ঋণনির্ভর এই বাজেটের লক্ষ্য লুটেরাদের পকেট ভারী করা। বাজেট প্রণয়নের জনগণের মতামত নেওয়া হয় না। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না। এই বাজেট মুক্তিযুদ্ধের দর্শনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল সোমবার এ সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন (ডিবিএম)। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নুরুল আলম মাসুদ প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক ডিবিএম। অ্যাকশন এইডের সঞ্চালনা করেন আসগর আলী সাবরি।

মূল প্রবন্ধে প্রস্তাবিত বাজেটকে দায়সারা গোছের প্রথাবদ্ধ উল্লেখ করে বলা হয়, এখানে দেশের মূল সমস্যাগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। বৈষম্য কমানোর দিকে নজর দেওয়া হয়নি। মানসম্মত কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাহ বলেন, বাজেট পেশের আগে জনগণের মতামত নেওয়া হয় না। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না। এমনকি সংসদীয় কমিটিগুলোতেও এ বিষয়ে মতামত চাওয়া হয় না। তাহলে বাজেট আসলে প্রণয়ন করে কে? বাজেটের ধনীদের জন্য সুবিধা দেওয়া হয়। এই নীতি মুক্তিযুদ্ধের দর্শনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজ্জেকুজ্জামান রতন বলেন, বাজেট হয়েছে ব্যবসায়ী শিল্প-মালিকদের স্বার্থে। এখানে শ্রমিকদের জন্য কিছু রাখা হয়নি।
বাজেটের মূলমন্ত্র হচ্ছে ধনীরা আরও ধনী হবে গরিবরা আরও গরিব। এটা গরিব মারার বাজেট। তিনি বলেন, ‘তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এই বরাদ্দে তিন কোটি তরুণের জন্য কর্মসংস্থান কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার সঠিক কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা আবদুল্লাহ আল কাফী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ধনী, ব্যবসাবান্ধব বাজেট। এর ফলে জনগণের মধ্যে বৈষম্য বাড়বে। কাফী বলেন, বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত কর্মসংস্থান সৃষ্টি। কিন্তু কর্মসংস্থান বিযুক্ত প্রবৃদ্ধি দেশের জন্য সুখকর নয়। বরং তা বৈষম্য বাড়িয়ে দেবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্নয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বাজেট বৈষম্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, বাজেটের বরাদ্দ নিয়ে আলোচনার চেয়ে ব্যয়ের বিষয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত। ১০০ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ৬০ টাকা লুটে নেওয়া হচ্ছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সংবিধানে অবৈধ উপার্জনের বিরোধিতা করা হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করা সরকার বারবার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে, এটা কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী নয়।

তিনি বলেন, প্রবাসী আয়ের ওপর প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এখন কালো টাকা পাচার করে রেমিট্যান্স হিসেবে দেশে পাঠিয়ে এই প্রণোদনা লুট হবে না সেই ভরসা কে দেবে? পরিবেশ দূষণ করে উন্নয়ন মডেল দাঁড় করানো হচ্ছে। তিনি পরিবেশ দূষণকারীদের ওপর দূষণকর আরোপের প্রস্তাব করেন।

 

 
Electronic Paper