ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শেষ দিনেও ট্রেনের টিকিট পেতে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ, মে ২৬, ২০১৯

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ হচ্ছে আজ (রোববার)। আজ দেয়া হচ্ছে ৪ জুনের টিকিট। ৪ জুনের টিকিট পেতে কেউ মধ্যরাতে আবার কেউ ভোরে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। লাইনগুলো এঁকেবেঁকে চলে গেছে পেছনের দিকে। শেষ দিনে কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেতে অন্যান্য দিনের তুলনায় টিকিট প্রত্যাশীদের উপস্থিত ছিল তুলনামূলক কম। তবে কাউন্টারগুলোর ধীরগতির কারণে টিকিট প্রত্যাশী যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ ছিল না।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে উত্তরবঙ্গ-পশ্চিমাঞ্চল ও খুলনা অঞ্চলে চলাচলকারী সুন্দরবন, চিত্রা, ধূমকেতু, বনলতা, সিল্কসিটি, পদ্মা, রংপুর, লালমনি, দ্রুতযান, নীলসাগর, একতা ও সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট দেয়া হচ্ছে। এই ১২টি ট্রেনের মোট ১১ হাজার ৬৯টি টিকিট দেয়া হবে। এছাড়া চারটি স্পেশাল মিলে মোট ১৬টি ট্রেনের ১৪ হাজার ৭০০ টিকিট বিক্রি হবে আজ।

কমলাপুরে নয়টি কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি হলেও প্রতিটি কাউন্টারে ধীরগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন টিকিট প্রত্যাশীরা।

উত্তরবঙ্গগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের জন্য কাউন্টারের অপেক্ষা করছিলেন চাকরিজীবী রুবেল হোসেন। তিনি বলেন, মধ্যরাতে টিকিট কাউন্টের এসে দাঁড়িয়েছি। এখনও আমার সামনে আরও অনেকজন দাঁড়ানো। কিন্তু কাউন্টারে ধীরগতির কারণে এখানে মানুষ খুবই বিরক্ত। একটি টিকিট বিক্রি করতে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে কাউন্টার। এমনিতেই রোজা রেখে মানুষ ১০/১২ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে তার ওপর যদি একটি টিকিট দিতে কাউন্টার থেকে এত দেড়ি করে তাহলে এটা সহ্য করা খুব কঠিন।

রাজশাহীগামী সিল্কসিটি ট্রেনের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন রাসেল আহমেদ। তিনি বলেন, গতরাতে এসে লাইনে দাঁড়ানোর কারণ যেন এসি টিকিট পাওয়া যায়, কিন্তু অল্প কিছুক্ষণের জন্য মধ্যেই কাউন্টার থেকে জানানো হলো এসি টিকিট শেষ। তবুও নরমাল টিকিটের জন্য হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করছে। এতে করে মানুষের ভোগান্তি আর দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক বলেনে, আগে ঈদের সময় এই কমলাপুরে ৩৩টি ট্রেনের টিকিট দেয়া হতো। এখন দেয়া হচ্ছে ১২টি ট্রেনের। এখন তো আগের তুলনায় ভিড় কমেছে। স্টেশনে দায়িত্বরত সকলেই সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন যেন যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার না হতে হয়। এছাড়া ঈদের সময় সবাই এসি টিকিট চায়, কিন্তু আমাদের এসি আসন তো সীমিত তাই সবাইকে দেয়া সম্ভব হয় না। প্রতিটি লাইনে মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন। এছাড়া ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছে।

রেলের অনলাইন টিকিট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেড বাংলাদেশ (সিএনএসবিডি) সূত্রে জানা গেছে, এবার ৫০ ভাগ টিকিট অনলাইনে তিন পদ্ধতিতে দেয়া হচ্ছে। প্রথমত মোবাইল এসএমএসে, দ্বিতীয়ত ওয়েবসাইট থেকে এবং তৃতীয়ত রেলের টিকিট কাটার সবশেষ ফিচার অ্যাপসের মাধ্যমে।

রেলভবন সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে ঈদের সময় একসঙ্গে প্রায় দেড় লাখ হিট পড়ে। তবে, সিএনএসবিডির যে সক্ষমতা তাতে মাত্র ২০ হাজার লোড নিতে পারে। যে কারণে সাধারণ মানুষ অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট পেতে ভোগান্তি হচ্ছে।

যাত্রীদের সুবিধার্থে এবার পাঁচটি স্থান থেকে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। যমুনা সেতু দিয়ে সমগ্র পশ্চিমাঞ্চলগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে কমলাপুরে। একজন যাত্রী চারটির বেশি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন না। ঈদের অগ্রিম বিক্রিত টিকিট ফেরত নেয়া হবে না। জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। এদিকে রেলের ফিরতি টিকেট বিক্রি ২৯ মে শুরু হয়ে ২ জুন পর্যন্ত চলবে।

 
Electronic Paper