ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আ.লীগ নেতা রুহুল আটক

ফেনী প্রতিনিধি
🕐 ৮:৫৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০১৯

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল শুক্রবার বিকালে সোনাগাজীর বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সদ্য সাবেক ব্যবস্থাপনা কমিটির সহসভাপতি। নুসরাত হত্যায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, পিবিআই প্রধান বনজকুমার মজুমদার। তবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ মামলার অন্যতম দুই আসামি নুরুদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এতে রুহুল আমিনের নাম উঠে আসে। শাহাদাত জবানবন্দিতে জানায়, নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর সে (শাহাদাত) দৌড়ে নিচে নেমে উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে বেরিয়ে যায়। এর মিনিট খানেকের মধ্যে নিরাপদ স্থানে গিয়ে রুহুল আমিনকে ফোনে নুসরাতকে আগুন দেওয়ার বিষয়টি জানায়। তখন রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি জানি। তোমরা চলে যাও।’

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি বাতিল
নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ১৩ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটি বাতিল (বিলুপ্ত) ঘোষণা করেছে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আহসান উল্লাহ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছেছে। ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান জানান, কমিটির সদস্যরা নুসরাত হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, চিঠির নির্দেশনা মোতাবেক ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, ‘কমিটি গঠন করতে হলে নীতিমালা অনুসারে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি থাকতে হবে। আমরা সেজন্য অপেক্ষা করছি।’

মণিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পিবিআই
নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি অংশ নেওয়া সহপাঠী কামরুন্নাহার ওরফে মণিকে নিয়ে ঘটনাস্থল ও বোরকার দোকান পরিদর্শন করেছে পিবিআই। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পিবিআইয়ের একটি দল রিমান্ডে থাকা মণিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, নুসরাত হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার কামরুন্নাহার ওরফে মণিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবালের নেতৃত্বে একটি দল মণিকে নিয়ে সোনাগাজী পৌর শহরের মানিক মিয়া প্লাজায় একটি বোরকার দোকানে গিয়ে দোকান মালিকের সঙ্গে কথা বলে। পরে পিবিআইয়ের দলটি সোনাগাজী মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানে নুসরাতকে কীভাবে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তার বিবরণ দেয় মণি।

সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করায় গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় কয়েকজন। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল মারা যান। আলোচিত এ হত্যা মামলায় পিবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন-অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগ্নি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের।

নুসরাতের ছোট ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস : পুড়ে ছারখার আমাদের সোনালি সংসার
ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার দশম দিন আজ। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল হাত-পা বেঁধে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় তার গায়ে। পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু হয় তার। মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডে এখনো থামেনি নুসরাতের স্বজনদের কান্না। বাবা-মা ও ভাইয়েরা নুসরাতের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে খুঁজছেন সান্ত্বনা। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটায় নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। শিরোনাম দেন ‘ঘাতকের আগুনে পুড়ে ছারখার আমাদের সোনালি সংসার’। দীর্ঘ এ স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়ে যায়।

স্ট্যাটাসে রায়হান লেখেন, ‘আবার এসেছিল বৈশাখ, পাড়া প্রতিবেশীর ঘরে ঘরে দেখছি আনন্দের বন্যা। আর আমাদের ছোট্টঘর নিকষ অন্ধকারে আচ্ছন্ন। অথচ গত বছরের এই সময় আমাদের এই সংসারে কতই না আনন্দ ছিল। আজ আপুমণিকে হারিয়ে সব উৎসব অশ্রুজলে বিবর্ণ হয়ে গেছে। ঘাতকের আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল আমাদের সোনালি সংসার।

কখনোই ভাবিনি আমাদের সমাজে মানুষের পোশাকধারী কিছু অসভ্য জন্তু-জানোয়ার বসবাস করে। যদি আগে জানতে পারতাম তাহলে কলিজার টুকরা আপুকে কখনোই ঘর থেকে বের হতে দিতাম না। মানুষ কতটা নির্দয়-নির্মম হলে একজন মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে! কী অপরাধ ছিল আমার আপুর?

একজন লম্পটের যৌন নিপীড়ন রুখে দিতে প্রতিবাদী হয়েছিল আমার আপু। সেই প্রতিবাদের মৃত্যু হয়েছে ১০৮ ঘণ্টা বার্ন ইউনিটে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) আপুর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের মাধ্যমে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। বাবা-মায়ের পর শিক্ষকরাই আমাদের বড় অভিভাবক। আর সেই অভিভাবক যখন একজন ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন, তখন মনে হয় এই সমাজ আর ভালো নেই। আবার লম্পটকে বাঁচানোর জন্য তার পক্ষ নিয়েছিল কিছু রাজনীতিবিদ ও মানুষরূপী লম্পট। লম্পটের বিচার চাইতে গিয়েছিলাম ওসি সাহেবের কাছে। তিনি আমার আপুকে নিরাপত্তা না দিয়ে মানসিক নির্যাতন করে ভিডিও করলেন। ওসি সাহেব যদি সচেতন হয়ে বিষয়টি তদন্ত করতেন কিংবা আমার আপুর নিরাপত্তা জোরদার করতেন, তাহলে আমার আপুকে পরপারে পাড়ি দিতে হতো না।

মনে পড়ছে আপুমণির আইসিউতে বলা শেষ কথাগুলো ‘রায়হান, আম্মা-আব্বার দিকে খেয়াল রাখিস। আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে বারণ করিস। আমাকে যারা পুড়িয়ে দিল তাদের যেন সঠিক বিচার হয়। না হলে আমি মরেও শান্তি পাব না।’ প্রধানমন্ত্রী আমার আপুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। লম্পটদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আপুকে দেশের বাইরে পাঠানোর জন্য ডাক্তারদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ডাক্তাররা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও আপুকে বাঁচাতে পারেনি। আমাদের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী ডেকে নিয়ে একজন মমতাময়ী মায়ের পরিচয় দিয়েছেন। আমরা তার কাছে বলেছি, আমার আপুর হত্যাকারীদের যেন দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়। তিনি আমাদের নিশ্চিত করেছেন, বিচারে কোনো দুর্বলতা রাখা হবে না। আসামিদের রেহাই দেওয়া হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিচার-প্রশাসনের প্রতি আস্থা রেখে বলতে চাই, এসব জানোয়ারের কঠিন শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। ভবিষ্যতে যেন কোনো ভাইয়ের বুক থেকে তার বোনকে কেড়ে নিতে না পারে।

প্রতিদিন সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরে দেখি আপুর রুমটা খালি পড়ে আছে। যেই টেবিলে বসে পড়ালেখা করত সেখানে বই খাতাগুলো ঠিকই আছে। আছে আপুর ব্যবহৃত জিনিসপত্রগুলো। নেই শুধু আমার কলিজার টুকরা আপুটি। বিশ্বাস করুণ, এক বুকচাপা কষ্ট, বেদনায় আমার ছোট্ট হৃদয়টি দুমড়ে মুচড়ে যায়। প্রতিটি মুহূর্তে মনে পড়ে যায় আপুর কথা। ঘুমের ঘোরে জেগে উঠি আপুর শেষ দিনগুলোর নির্মম কষ্টের কথা স্বপ্নে দেখে। শেষ রাতে চোখে এক ফোঁটা ঘুম আসে না আপুর কথা ভেবে।

আমাদের পরিবারের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক ছিল আপু। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে তার ছিল আন্তরিকতাপূর্ণ ভালোবাসার সম্পর্ক। শান্ত মেজাজের অধিকারী হওয়ায় পরিবারের সব সমস্যা অত্যন্ত ধীরচিত্তে সমাধান করতেন। আমাদের সঙ্গে দূরের কথা পাড়া-প্রতিবেশীর কারও সঙ্গে কোনোদিন ঝগড়া-বিবাদে নিজেকে জড়াননি। আব্বুর অনেক আস্থাভাজন হওয়ার কারণে আব্বু কোনোদিন তার প্রিয় সন্তানের কোনো চাহিদা অপূর্ণ রাখেননি। প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর তার কোরআন তেলাওয়াতের মধুর সুর এখনো আমার কানে বাজে।

বাড়ির সব কাজে আম্মুকে সহযোগিতা করতেন। আম্মু আমাদের নিয়ে টেনশন করলে, আপু অভয় দিয়ে বলতেন আমরা এমন কোনো কাজ করব না যাতে আপনাদের সম্মান হানি হয়। বরং আমরা ৩ ভাইবোন পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে সমাজে আপনাদের মুখ উজ্জল করব। সেই উজ্জ্বলতার প্রতিচ্ছবি ছিল আমাদের সংসার। আপুর মতো ক্ষণজন্মা বোন আমাদের ছোট ঘরকে সব সময় আলোকিত করে রাখতেন, যা আজ নিভে গিয়ে একমুঠো ছায়ায় পরিণত হয়েছে।

আজ সারা দেশে এমন কি দেশের বাইরেও আমার আপুর হত্যাকাণ্ড মানুষ যেভাবে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে, তাতে আমার মনে পড়ে যাচ্ছে কবির বলে যাওয়া কথা...‘এমন জীবন করিবে গঠন / মরণে হাসিবে তুমি/ কাঁদিবে ভুবন’।

আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া আমার আপুকে যেন তিনি জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আর খুনিদের দুনিয়া ও আখিরাতে কঠোর শাস্তি প্রদান করেন। (আমীন)’

মানি লন্ডারিং সংশ্লিষ্টতা অনুসন্ধান সিআইডির ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মানি লন্ডারিংয়ের সংশ্লিষ্টতা অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।

শুক্রবার সকালে সিআইডির সিনিয়র সহকারী বিশেষ পুলিশ সুপার শারমিন জাহান খোলা কাগজকে এ তথ্য জানান।

নুসরাত হত্যাকাণ্ডে কোনো আর্থিক লেনদেন ছিল কি না, যদি থাকে তাহলে কে বা কারা অর্থ দিয়েছেন- এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতেই মাঠে নেমেছেন সিআইডির কর্মকর্তারা। শারমিন জাহান বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে অর্থের লেনদেন হয়েছে। সেই অভিযোগেরই তদন্ত করবে সিআইডি। সত্যিই যদি অর্থের লেনদেন হয় তাহলে অর্থ জোগানদাতাকে খুঁজে বের করা হবে।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যা ও যৌন হয়রানির ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে এসব তথ্য গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি। এ টাকার উৎস জানতে সিআইডি প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছে। যৌন হয়রানি ও হত্যা মামলা দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ ইউনিট তদন্ত করবে। তবে মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টি তদন্ত করবে সিআইডি।

 
Electronic Paper