ওয়াসা ও গ্যাস নিয়ে টিআইবি
পানি ফোটাতে খরচ ৩৩২ কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০১৯
পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারেনি ঢাকা ওয়াসা। এজন্য ওয়াসার ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করেন। এই পানি ফোটাতেই বছরে জ্বালানি বাবদ ব্যয় হচ্ছে ৩৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ এ কাজে ৩৬ কোটি ৫৭ লাখ ৩৭ হাজার ঘনমিটার গ্যাস পুড়ছে। এছাড়া ওয়াসায় ঘুষ দুর্নীতি জেঁকে বসেছে।
গতকাল বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা ওয়াসার গ্রাহকদের ৫১ দশমিক পাঁচ শতাংশ বলছেন, পানি অপরিষ্কার, ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ গ্রাহক পানিতে দুর্গন্ধ থাকার কথা বলেছেন। আর ৩৪ দশমিক পাঁচ শতাংশ গ্রাহক বলছেন, সারা বছরই পানি অপরিষ্কার ও দুর্গন্ধযুক্ত থাকে। টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীতে প্রতিদিন ১৪ লাখ ঘনমিটার পয়ঃবর্জ্য তৈরি হলেও ওয়াসার রয়েছে দেড় লাখ ঘনমিটার সক্ষমতার একটি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। কিন্তু এই প্লান্টে প্রতিদিন পরিশোধন হয় ৫০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য।
টিআইবি জানায়, ওয়াসার প্রায় ৬২ শতাংশ গ্রাহক অনিয়ম, হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার। নিয়োগের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ ঘটে। পানির সংযোগের জন্য ২০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। এছাড়া পয়ঃলাইনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ৩০০-৪৫০০ টাকা, গাড়িতে জরুরি পানি সরবরাহের জন্য ২০০-১৫০০, মিটার ক্রয়/পরিবর্তনের জন্য এক হাজার-১৫ হাজার টাকা, মিটার রিডিং ও বিল সংক্রান্ত কাজের জন্য ৫০-তিন হাজার টাকা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনে এক থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়।
প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ্মা-যশলদিয়া পানি শোধনাগার প্রকল্প ২০১৩ সালে শুরু হয়ে ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো কাজ চলছে। ২০১৪ সালে শুরু হওয়া সায়েদাবাদ (ফেজ-৩) পানি শোধনাগার ২০২০ সালে শেষ হওয়ার। কিন্তু ২০১৮ পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র দুই শতাংশ।
এসব থেকে উত্তরণে টিআইবি পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবার মূল্য নির্ধারণে রেগুলেটরি কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের একচ্ছত্র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে ওয়াসা।