ডাকসুর পুনঃনির্বাচনের দাবি
আচার্যের শরণাপন্ন হবে আন্দোলনকারীরা
হাসান ওয়ালী
🕐 ১১:১৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০১৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) পুনঃনির্বাচনের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট এবং অনশন কর্মসূচিতে ‘সাড়া’ কম পাওয়ায় কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসছেন আন্দোলনকারীরা। তবে এ দাবিকে সামনে রেখে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলর অব্যাহত রাখবেন তারা।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিগগিরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শরণাপন্ন হয়ে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানাতে চায় নির্বাচন বয়কট করা বেশির ভাগ প্যানেল। পুনঃনির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনকারী বিভিন্ন প্যানেলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
কঠোর কর্মসূচি থেকে সরে আসার কারণ হিসেবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, নির্বাচন বয়কট করে পুনঃনির্বাচনের দাবি করেও ভিপি নির্বাচিত হওয়া নুরুল হক নুরুর দ্বিমুখী বক্তব্য আন্দোলনকে নড়বড়ে করে দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, নির্বাচন বয়কট এবং পুনঃনির্বাচনের দাবি একসঙ্গে করলেও ভিপি পদে বিজয়ের পর সুর পাল্টাতে থাকেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেলে নেতৃত্ব দেওয়া নুর। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে নিজের ভিপি এবং তার নেতৃত্বাধীন প্যানেলের সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের পদ ছাড়া অন্য পদে নির্বাচন দাবি করা এবং গণভবনে গিয়ে ‘নির্বাচনে কিছুটা অনিয়ম হয়েছে’ বলে নির্বাচনকে ‘স্বীকৃতি’ দেওয়াকে আন্দোলন থমকে যাওয়ার জন্য দায়ী করছেন তারা।
এ পরিস্থিতে কঠোর কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এসে নিয়মতান্ত্রিক পথে হাঁটতে চান তারা। এর জন্য শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনের অনিয়মের অভিযোগ জানিয়ে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানাবে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বয়কট করা প্যানেলগুলো।
এর আগে, দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া ডাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ঘণ্টা দেড়েক আগেই কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বয়কট করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, প্রগতিশীল ছাত্রঐক্য, স্বতন্ত্র জোট, স্বাধিকার স্বতন্ত্র জোট এবং ছাত্র ফেডারেশন সমর্থিত স্বতন্ত্র জোট। একই দাবিতে ক্যাম্পাসে সরব উপস্থিতির জানান দিচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
এ প্রসঙ্গে প্রগতিশীল ছাত্রঐক্যের প্যানেলে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা লিটন নন্দী খোলা কাগজকে বলেন, নুরুল হক নুরের নানারকম বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হয়েছে, যার কারণে একটি যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন আর সামনে এগুলো না। তবে নৈতিকভাবে আমরা পুনঃনির্বাচনের দাবিতে অটল আছি। খুব শিগগিরই আমরা আচার্যের সাঙ্গে দেখা করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানাব। আমরা আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আগামী ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে ডাকসু এবং হল সংসদে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিজয়ী প্রার্থীরাও উপস্থিত থাকবে বলে ধারণা করছেন আন্দোলনকারীরা। তবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে খোলা কাগজকে জানিয়েছেন এই প্যানেল থেকে নির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর। আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নিলে নুরুল হক নুরের প্যানেলকে ছাড়া আন্দোলন চালিয়ে যাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া চার প্যানেল-প্রগতিশীল ছাত্রঐক্য, স্বতন্ত্র জোট, স্বাধিকার স্বতন্ত্র জোট এবং ছাত্র ফেডারেশন সমর্থিত স্বতন্ত্র জোট।
এ প্রসঙ্গে ছাত্র ফেডারেশন মনোনীত প্যানেলে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উম্মে হাবিবা বেনজীর খোলা কাগজকে বলেন, আমরা সর্বশেষ ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করেও ভিসি স্যারের দেখা পাইনি। সেদিন আমরা তাৎক্ষণিক অন্য কর্মসূচির ঘোষণা না দেওয়ায় আপাতত কোনো কর্মসূচি নেই। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, নুর যদি শপথ নেয় তাহলে আমরা আমাদের মতো করে আন্দোলন চালিয়ে যাব।