ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

লোকাল ট্রেনের টিকিটে আন্তঃনগরে ভ্রমণ

আহমেদ ইসমাম
🕐 ১০:৪৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০১৯

রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মেইল ট্রেনের মাসভিত্তিক টিকিটে আন্তঃনগরে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। এতে করে বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। বিশেষ করে অফিস শুরুর আগে ও অফিস ছুটি শেষে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে যাত্রীর চাপ এত বেশি থাকে, টিকিটধারী যাত্রীদের ট্রেনে ঠাঁই পাওয়াটা রীতিমতো যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও কয়েকগুণ। ট্রেন যাত্রীদের এ ভোগান্তি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে দায়সারা গোছের উত্তর দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

কমলাপুর স্টেশনে সরেজমিন গিয়ে খুলনা, রাজশাহী, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রংপুর রুটের আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রীদের কামরায় উঠতে ও নামতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়।

যাত্রীরা জানান, কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর ও জয়দেবপুরগামী যাত্রীর অতিরিক্ত চাপে এ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। এই দুটি স্টেশনের যাত্রীরা কাছাকাছি দূরত্বে যাওয়ায় গেটের মুখেই জটলা করে থাকেন। এতে করে নির্দিষ্ট রুটের যাত্রীরা চাইলেও তাদের নির্ধারিত আসনে যেতে পারছেন না।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, জয়দেবপুর থেকে কমলাপুরে আসা-যাওয়াকারী যাত্রীদের দৈনিক টিকিটের ঝামেলা এড়াতে সম্প্রতি মাসভিত্তিক টিকিট চালু করা হয়েছে। এ টিকিটে ৪৫০ টাকায় সারা মাস যাতায়াত করতে পারেন যাত্রীরা। কম টাকায় সারা মাসের টিকিট মেলায় যাত্রীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

জানা গেছে, মেইল ট্রেনে জয়দেবপুর থেকে কমলাপুর যাতায়াত করতে ভাড়া লাগে ৬০ টাকা। এ হিসাবে মাসে লাগে ১ হাজার ৮০০ টাকা। আর অন্তঃনগর ট্রেনে এ দূরত্বে ভাড়া লাগে ১০০ টাকা, সেই হিসাবে মাসে খরচ হয় ৩ হাজার টাকা। তবে মাসের টিকিটে ৪৫০ টাকায় যতবার খুশি ততবার আসা-যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে এই টিকিটে মেইল ট্রেনের কথা উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৪৬ হাজার যাত্রী মাসভিত্তিক এ টিকিটের সুবিধা নিচ্ছেন। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর গাফিলতির কারণে এদের বড় অংশই আন্তঃনগর ট্রেনে যাতায়াত করছেন।

গত রোববার সন্ধ্যায় দেখা যায়, ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ওঠার জন্য দুইজন যাত্রী প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। গেটে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের কাকুতি-মিনতি করতেও দেখা যায় তাদের। কথা বলে জানা যায়, তাদের গন্তব্য পঞ্চগড়। যানজটের কারণে স্টেশনে পৌঁছতে দেরি হয়েছে। নির্দিষ্ট বগি খুঁজে পেতেও অনেকটা সময় গেছে। ট্রেন ছাড়ার আগমূহূর্তে বগি খুঁজে পেলেও তারা উঠতে পারছেন না। কারণ ট্রেনের দরজার রড ধরে পাদানিতে ঝুলছে কয়েকজন।

ঝুলন্ত যাত্রীদের গলায় ছবিসহ মাসিক ট্রেনের টিকিট। কথা বলে জানা যায়, তারা যাবেন বিমানবন্দর স্টেশন। মেইল ট্রেনের টিকিটে কেন আন্তঃনগরে চড়েছেন, এমন প্রশ্নে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তো তাও টিকিট করেছি বেশিরভাগ তো টিকিটই করেন না।’

পঞ্চগড়গামী দুই যাত্রী একসময় ট্রেনে ওঠার জন্য চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। কিছু দূরে দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা গেলেও তারা কেউ এগিয়ে আসেননি। ট্রেন ছাড়ার একেবারে শেষ মুহূর্র্তে বগির ভেতরের কয়েকজন একটু জায়গা করে দিলে কোনো রকমে পাদানিতে দাঁড়াতে পারেন ওই দুইজন।

এ বিষয়ে কমলাপুরের স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী খোলা কাগজকে বলেন, ‘আমরা এ টিকিট শুধু মেইল ট্রেনের জন্য। বেসরকারি বা আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য নয়। কেউ যদি এই টিকিটে অন্য ট্রেনে ওঠে তবে তাদের জরিমানা করা হবে।’

 
Electronic Paper