ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

৯৩ ভাগ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ

ছাইফুল ইসলাম মাছুম
🕐 ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০১৯

দেশের ৯৩ ভাগ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হয় বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে ভোক্তা-বিক্রেতা সবার মাঝে সচেতনতা জরুরি বলে মনে করছে সংস্থাটি।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার খোলা কাগজকে বলেন, ‘বাজার মনিটরিং করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, ঢাকা শহরের ৯৩ ভাগ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রয়েছে। আর সারা দেশে এমন ফার্মেসির সংখ্যা ৯৩ ভাগের চেয়ে বেশি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ভ্রাম্যমাণ অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের ফার্মেসিগুলোকে জরিমানা করছি। ফার্মেসি মালিকদের সচেতন করতে সভা করছি।’

সম্প্রতি জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার মেডিসিন কর্নারকে এক লাখ ৬০ হাজার, ওয়েল ফার্মাকে ৫০ হাজার টাকাসহ বেশ কয়েকটি ফার্মেসিকে জরিমানা করে।

অভিযানে অংশ নেওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা অফিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ধানমন্ডি শাখায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মেডিসিন কর্নারে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায়। এ ধরনের ওষুধ রোগীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি যে বিদেশি ওষুধ বিক্রি করছিল সেগুলোর গায়ে আমদানিকারকের কোনো স্টিকার ছিল না। এসব অভিযোগে পৃথক পৃথক করে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফার্মেসিগুলোর এমন চিত্র রাজধানীসহ সারা দেশে। দেশের বৃহত্তম ওষুধের মার্কেট মিটফোর্ড বাবুবাজার এলাকায় পাইকারি বিদেশি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ এসব ওষুধ বিক্রিতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে এমন ওষুধও নতুন করে ২০২০, ২০২১ সালের মেয়াদ লাগিয়ে বাজারজাত করছে ওই সিন্ডিকেটটি।

তথ্যসূত্র মতে, সংঘবদ্ধ এ সিন্ডিকেট রাজধানী ঢাকা থেকে মফস্বলে এই মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। নানা সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ধরাও পড়ছে তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্যান্সার, হৃদরোগের ওষুধসহ প্রায় ১৬১ ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করছে ওই চক্রটি।

র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত গত বছর মিটফোর্ড ওষুধের মার্কেটসহ সারা দেশে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বাজারজাত করার সঙ্গে জড়িত ৪৪৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন। এ সময় ৮২ কোটি টাকার ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৬ কোটি, ৫৬ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা। মামলা করা হয়েছে ৩৬৮টি।

এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি।’

 
Electronic Paper