করুণ মৃত্যু কীভাবে সইব
এম কবীর
🕐 ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু নিহতদের স্বজনরা বারবার ধ্বংসস্ত‚পের কাছে এসে বিলাপ করছেন। স্থানীয় সড়কগুলোতে নিহতদের স্মরণে শোক প্রকাশ করে ব্যানার ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এখানে কথা হয়, নাসির উদ্দিন নামে এক ষাটোর্ধ বৃদ্ধের সঙ্গে। গত বুধবার রাতে তিনি একমাত্র ছেলেসন্তান ওয়াসি উদ্দিন মাহিদকে হারান। তিনি এ ঘটনায় নিহত অন্যান্য পরিবারের মতো বাকরুদ্ধ। তিনি দৈনিক খোলা কাগজকে জানান, তিন মেয়ে আজরীন, আনহা, সারজা ও একমাত্র ছেলে ওয়াসি উদ্দিন মাহিদকে নিয়ে সুখেই ছিলেন। ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে বড় মেয়ে আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আজরীন মাত্র ২২ বছর বয়সে ব্লাড ক্যান্সারে মারা যায়। এরপর নতুন করে দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে ভালোই চলছিল জীবন। ওইদিন মায়ের জন্য পানি কিনতে আনতে বাইরে গিয়েছিল মাহিদ। আর ফিরে এলো না ছেলে।
বৃদ্ধ নাসির উদ্দিনের চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরতে থাকে। তিনি বলেন, সন্তানের লাশ বহন করা পিতার কাছে কতটুকু বিষাদের তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। মরদেহটি শনাক্ত করে দাফন করতে পেরেছেন এটাই পিতার কাছে একমাত্র সান্ত্বনা।
তিনি যখন ছেলের জন্য হৃদয়ের রক্তক্ষরণের কথাগুলো বলছিলেন পাশে থাকা নিহত মাহিদের বন্ধুরাও চাপা কান্নায় বুক ভাসাচ্ছিল। বন্ধু সংগীত জানান, এই তো কয়েকদিন আগে সব বন্ধুরা মিলে বিশ্ব ইজতেমায় গিয়েছিলাম। মাহিদ শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় যেতে পারেনি কিন্তু সবার কাছে দোয়া চেয়েছিল। আজ সেই বন্ধুর পোড়াদেহ নিজ হাতেই দাফন করেছি।
তিনি বলেন, প্লাস্টিকের যেসব কারখানা বা গুদামঘর এই এলাকায় রয়েছে সেগুলো দ্রুত অপসারণ করা উচিত। তা ছাড়া রাসায়নিক কারখানা নয় এর সঙ্গে জুতার সলিউশন, ইলেকট্রনিকসের দোকানে নানা দাহ্য পদার্থের কারখানা আবাসিক এলাকায় যাতে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওয়াসি উদ্দিন মাহিদের লাশ তার পরিবার শনাক্ত করে এবং শুক্রবার লালবাগ শাহী মসজিদে জানাজার পর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।