বিচারহীনতার সংস্কৃতিই দায়ী
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০১৯
সন্ত্রাস, ইভটিজিংসহ নানা সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে খুনের মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিক ও সমাজ বিশ্লেষকরা।
দেশে সুশাসন রহিত হওয়ার এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি জেঁকে বসার কারণেই ক্ষমতাশালী ও দুর্বৃত্তরা এ ধরনের অপরাধ সংঘটনে উৎসাহিত হচ্ছে বলে মনে করেন তারা।
ইতিপূর্বে সংঘটিত নানা ঘটনার বিশ্লেষণ করে অনেকেই বলছেন, একটা ঘটনার বিচার সম্পন্ন হতেই এক থেকে দেড় যুগ পার হয়ে যায়। এর মধ্যে অপরাধীদের অনেককে জামিন নিয়ে বীরদর্পে এলাকায় ঘুরতেও দেখা যায়। ফলে নিহত প্রতিবাদকারীর পরিবারের লোকজন উল্টো নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। অনেক ক্ষেত্রে মামলার আসামিরাই বাদীপক্ষকে নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে থাকে। ফলে জীবন নিয়ে সংশয়ে থাকেন বাদীপক্ষের লোকজন।
অপরাধীদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের আশ্রয় পায় বলেও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। এর ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। আদালতেও এ দুর্বৃত্তদের বাঁচাতে প্রভাবশালী চক্র মরিয়া হয়ে ওঠে। ফলে টাকা, ভয়ভীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ইত্যাদির কারণে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হন ভুক্তভোগীরা। এতে আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি বিশ্বাস হারাচ্ছেন অনেকে। অপরাধীদের প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে ভেঙে পড়ছে সামাজিক শৃঙ্খলাও।
অনেকে সামাজিক মূল্যবোধের অবনতির কথাও বলছেন। সেই সঙ্গে সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে মানুষের সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সামাজিক ঐক্য গড়ে তোলার পক্ষেও জোর দিয়েছেন। এ জন্য স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও সামাজিক নানা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিং, ধর্ষণ-এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার মানসিকতা তৈরিতে কাজ করতে হবে।
মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, সর্বত্রই বিচারহীনতার সংস্কৃতি জেঁকে বসেছে। অপরাধীরা যখন নিশ্চিত হয় যে অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে তাহলে অপরাধ সংঘটনের মাত্রা আরও অবাধ হয়। অর্থ, রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি, ক্ষমতার প্রশ্রয় ইত্যাদি কারণে সত্যিকার অর্থেই পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। ফলে বিদ্যমান ব্যবস্থায় বিচার নিয়ে মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব তৈরি হয়। এতে মানুষ যেমন নিজেদের প্রতি আস্থা হারায় তেমনি আত্মমর্যাদাও আঘাতগ্রস্ত হয়। এর ফলে সমাজে অন্যায়ের প্রতিবাদ রহিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ থেকে বেরুতে হলে আইনের শাসন ও যে কোনো অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।