ব্যবসায়ীকে জরিমানা
এম কবীর
🕐 ১০:৩৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
এক সপ্তাহ পর ধীরে ধীরে জমে উঠছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। দর্শনার্থী বাড়ার পাশাপাশি চলছে কেনাকাটার ধুম। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে লোভনীয় অফার ও মূল্যছাড় দিচ্ছে বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন। মেলার শুরু থেকেই বিভিন্ন স্টলে বেশি বিক্রি হচ্ছে গৃহস্থালির পণ্য। তাই গৃহস্থালির পণ্যের স্টলগুলোতে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থাটিও রয়েছে সতর্ক অবস্থায়। অষ্টম দিনে এসে ক্রেতাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একজন ব্যবসায়ীকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে প্রশাসন।
মেলা প্রাঙ্গণ সরেজমিন দেখা যায়, মেলার শুরুর দিন থেকে গত শুক্রবার ব্যতীত বাকি দিনগুলোতে দর্শনার্থীর সংখ্যা আনুপাতিক হারে কম ছিল। তার মধ্যে ক্রেতার সংখ্যা ছিল একেবারেই কম। তবে অষ্টম দিনে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গিয়েছে পুরো মেলাজুড়ে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পর পরই ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। কেনাকাটার দিক দিয়ে গৃহস্থালির পণ্যের স্টলগুলোতে ভিড় বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। কারণ হিসেবে দেখা যায়, গৃহস্থালির স্টলগুলোতে একটি পণ্য কিনলেই আরও কয়েকটি ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। তাই ক্রেতারা সেদিকেই ধাবিত হচ্ছে।
আমেনা আক্তার নামে এক গৃহিণী জানান, মেলায় বিভিন্ন কোম্পানির অফার ও ছাড়ের মাধ্যমে রকমারি পণ্য নিয়ে আসে। তাই দেখেশুনে ভালো জিনিস কেনার মতো সুযোগ রয়েছে। প্রতিবছরের মতো এ বছরও বেশ কিছু জিনিস কিনেছেন তিনি। আমেনা আক্তারের মতো অনেক গৃহিণীরা তাদের প্রয়োজনীয় ও পছন্দের পণ্যটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এই মেলা থেকে। মেলায় আগত দর্শনার্থী, ক্রেতা- বিক্রেতারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় অনেক খুশি।
তবে মেলা শুরু হওয়ার দিন থেকে এখন পর্যন্ত ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরে ক্রেতার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতালিয়ান পণ্যের রিকো মার্কেটিংকে (প্যাভিলিয়ন ৮) ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে অধিদপ্তরটি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শাহনাজ সুলতানা বলেন, মেলা শুরুর পর থেকে আটটি অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। তার মধ্যে দুটি সমঝোতার মাধ্যমে শেষ হয়েছে, তিনটি অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। আর দুটি অভিযোগের তদন্ত চলছে। মূল্য হ্রাস ও ছাড়ে ক্রোকারিজ জাতীয় পণ্য বিদেশি বলে দেশি পণ্য ভোক্তাকে দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে এক ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মিরপুর থেকে আসা ড. কামরুন মোস্তফা লোনা নামে একজন নারী ৪৮ হাজার টাকার ইতালিয়ান পণ্য ভেবে ক্রয় করেছিলেন। পরবর্তীতে বাসায় ফিরে তিনি বুঝতে পারেন পণ্যটি দেশি এবং বাজার মূল্য তার চেয়ে বেশি নিয়েছে রিকো মার্কেটিং নামে প্যাভিলিয়নের দোকানদার। অভিযোগের পরপরই বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী পণ্য না দেওয়ার অপরাধে দোকান মালিককে নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে পণ্য ফেরত দেয়া হয়। জরিমানার ২৫% অর্থ অভিযোগকারীকে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সহকারী পরিচালক শাহনাজ সুলতানা।
অন্যদিকে মেলার পরিবেশ শান্ত থাকা এবং দর্শনার্থীদের ভিড় দেখে সন্তেুাষ প্রকাশ করেছে মেলার আয়োজক ও ব্যবসায়ীরা। তাদের প্রত্যাশা আজ থেকে মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়তে থাকবে এবং অতীতের যে কোনো মেলার চেয়ে এই মেলা আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।