মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের ওপর প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৭:০৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘এই উম্মাহ’র একসঙ্গে থাকা উচিত। মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সৃষ্ট সংঘাতে ওই দেশগুলোর জনগণকেই ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এজন্য মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কোন সমস্যা দেখা দিলে তা আলাপ- আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।’
বুধবার (১৬জানুয়ারি) সকালে বাংলাদেশে নবনিযূক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাওফর প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে শেখ হাসিনা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জন্য এক ব্রিফিং দেন। এতে জানা যায়, বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে অভিন্ন সাংস্কৃতিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে- ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।’
প্রধানমন্ত্রী ইরানের জনগণকে সাহসী হিসেবে উল্লেখ করে আরো বলেন, ইরানের অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হচ্ছে।
এ ছাড়াও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অসাধারণ দিকসমূহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণের জীবন-মানের উন্নয়নে তাঁর সরকার কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমরা দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশে নামিয়ে এনেছি এবং আমাদের উন্নয়ন নীতিমালা হচ্ছে গ্রাম কেন্দ্রিক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিরাজমান ধর্মীয় সম্প্রীতির উল্লেখ করে বলেন, এখানে সব ধর্মের মানুষ একত্রে যেকোন ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করে।
তিনি বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালিন তাঁর সরকারের পক্ষে থেকে সম্ভাব্য সব রকমের সহযোগিতা প্রদানে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বাস দেন। এরপর তিনি ২০১২ সালে ষষ্ঠ ন্যাম সম্মেলন এবং ১৯৯৭ সালে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে তাঁর ইরান সফরের কথা স্মরণ করেন এবং ইরানের রাষ্ট্রপতির প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
ইরানের রাষ্ট্রদূত বৈঠকে ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর দলের বিপুল বিজয়ে ইরানের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
রেজা নাওফর দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর সুষম উন্নয়ন নীতিমালার ভূয়সী প্রশংসা করে, শেখ হাসিনাকে একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করে বলেন,‘আমরা ইরানের সব মানুষ আপনাকে ভালবাসি।’
তিনি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক মেল বন্ধনের উল্লেখ করে রেজা নাওফর বলেন, ‘আমাদের এই সম্পর্ককে আমাদের আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
রেজা নাওফর আরো বলেন, দুই দেশের মধ্যে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভাল সহযোগিতা রয়েছে। রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্কও সুন্দর অবস্থানে রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি বর্তমানে সন্তোষজনক অবস্থা নেই।
‘পশ্চিমা অবরোধ সত্ত্বেও ইরান এগিয়ে যাচ্ছে’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা এই অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করে যাচ্ছি, কেননা আমরা কোন যুদ্ধবাজ দেশ নই।’
ইরানের রাষ্ট্রদূত বলেন ‘এই অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেকোন উদ্যোগকে ইরান স্বাগত জানাবে।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।