ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

জারের পানিতে মশার লার্ভা

এম কবীর
🕐 ১০:৪৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮

পানির অপর নাম জীবন। একথাটি যেমন সত্য তেমনি বিশুদ্ধ পানি পান না করলে পানি অনেক সময় জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। তবে বলা যায়, বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন। নগরজুড়ে বর্তমানে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বিশুদ্ধ পানি পরিশোধন ও বাজারজাতকরণের বিভিন্ন কোম্পানি। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন থেকে লাইসেন্স নিয়ে পানি বিক্রির ধুম পড়েছে নগরজুড়ে। শরীরের সুস্থতা ও তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পানির মূল্য অপরিসীম। কিন্তু আমরা কখনোই কি ভেবে দেখেছি যারা জারে করে পানি বিভিন্ন অফিস কিংবা বাসাবাড়িতে সরবরাহ করছে সেই পানি কতটুকু নিরাপদ! নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নানা কোম্পানি জারে করে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছে। আদৌ কি জারে সরবরাহ করা পানি বিশুদ্ধ!

দীর্ঘদিন ধরে নীলসাগর গ্রুপে পানি সরবরাহ করে উত্তরা-তুরাগের ‘গ্যাটকো অ্যান্ড গোডো টেকনো’ প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি। নীলসাগর গ্রুপে কর্মরত অনেক কর্মকর্তাই প্রায়ই পেটের পীড়ায় ভোগে। বিষয়টি আলোচনা আসায় সবারই দৃষ্টি পড়ে জারে সরবরাহ করা পানির দিকে। মঙ্গলবার সরবরাহ করা পানির জার লক্ষ করে দেখা যায়, জারে শ্যাওলাসহ পানিতে মশার লার্ভা। তখনই বিষয়টি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয় এবং বুঝতে পারেন পেটের পীড়ার আসল রহস্য। জারের পানি নিরাপদ তো নয়ই বরং তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জারে সরবরাহ করা গ্যাটকো অ্যান্ড গোডো টেকনো প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ তানভির আহমেদকে মোবাইলে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। কোম্পানির পানি সরবরাহকারী ডিলার মো. রাসেল জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। নীলসাগর গ্রুপের মিডিয়া দৈনিক খোলা কাগজ-এর অফিসে জারের পানি থেকে শ্যাওলা ও মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। কি কারণে এ পানির মধ্যে শ্যাওলা ও মশার লার্ভা এলো তার কোনো ব্যাখ্যা না দিলেও তিনি বিষয়টি চাপিয়ে রাখার জন্য অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান খোলা কাগজকে বলেন, যারা এ পানির ব্যবস্থা করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রায় সময়ই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তারপরও তারা ভালো পথে আসছে না। এক কথায়, এ ব্যবসায়ীরা ভালো পথে আসছে না। এদের বিরুদ্ধে আরও বেশি অভিযান জোরদার করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এখন এ মুহূর্তে আমরা যারা ভোক্তা আছি তাদের সতর্কতা অবলম্বন ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। মানুষকে সতর্ক ও যেসব কোম্পানির পানিতে ময়লা বা কোনো জার্ম জাতীয় কিছু পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো পরিহার করাই শ্রেয়। প্রশাসন কঠোর হলে অবশ্যই এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে ঢাকা মহানগরে অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলম বলেন, র‌্যাব দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য অভিযান পরিচালনা করছে। প্রতি সপ্তাহেই পানি সরবরাহকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের কারণে জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। তারপরও অসাধু কিছু ব্যবসায়ী অতি মুনাফার আশায় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে এ ব্যবসা করছে। পানির মধ্যে শ্যাওলা ও মশার লার্ভা পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 
Electronic Paper