ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ইশতেহারে কেমন সড়ক চাই

শফিক হাসান
🕐 ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮

যাত্রী সাধারণের অনিঃশেষ দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়কের অব্যবস্থাপনা ও নৈরাজ্য। প্রায় প্রতিদিনই নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায়। এতে সরকারও অনেকটাই বিব্রত। দুর্ঘটনা রোধে আইন প্রণয়নসহ নানা রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও থামানো যাচ্ছে না এ রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড। পরিবহন খাত দুর্বৃত্তদের হাতে চলে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টরা বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন। দুর্বৃত্তদের একটি অংশ সরকারের ভেতরেই কখনো ছদ্মাবরণ কখনো বা প্রকাশ্যে থাকায় শৃঙ্খলা ফিরছে না সড়কে। সৃষ্টি হয়েছে নানামুখী সংকট। বিশেষজ্ঞরা বরাবরই বলেছেন, সরকার যে দ্বৈতনীতিতে চলছে তাতে শৃঙ্খলা ফেরার আশু সম্ভাবনা নেই। সমাধান চাইলে সরকারকে কঠোর এবং সৎ অবস্থান থেকেই মোকাবেলা করতে হবে।

অল্প সময়ের মধ্যেই বড় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করবে। ইশতেহারে কোন কোন বিষয় প্রাধান্য পাওয়া উচিত সংশ্লিষ্টরা তা প্রকাশ করেছেন খোলা কাগজের কাছে।

সুস্পষ্ট ভাষায় বলা দরকার : সৈয়দ আবুল মকসুদ (লেখক-বুদ্ধিজীবী)
আর্থসামাজিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন। বাংলাদেশ জনবহুল দেশ। রেল যোগাযোগ বিপর্যস্ত। নৌপথ ক্রমাগত কমে এসেছে। এ অবস্থায় যাতায়াতে এবং মাল পরিবহনে ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সড়কের ওপর নির্ভর করতে হয়। রাজনৈতিক দলগুলো গতানুগতিক ভাষায় উন্নয়নের জন্য অঙ্গীকার করে। সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে এবং সড়কের বিশৃঙ্খলা কমিয়ে আনতে তারা কী কী ব্যবস্থা করবেন তা নির্বাচনী ইশতেহারে গুরুত্ব পাচ্ছে না। ইশতেহারে সবার আগে সড়ক যোগাযোগ উন্নতির জন্য কী ব্যবস্থা তারা নিতে চান তা সুস্পষ্ট ভাষায় বলা দরকার। সেটা শুধু সড়কে যাতায়াতকারীদের স্বার্থে নয়, দেশের সামগ্রিক আর্থসামাজিক অগ্রগতির স্বার্থে।

নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেওয়া উচিত : মোজাম্মেল হক চৌধুরী (মহাসচিব, যাত্রী কল্যাণ সমিতি)
সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বিষয়টিকে সরকার আমলে আনতে চায় না। এটি আসলে জাতীয় সমস্যা। জাতীয় সমস্যা হিসেবে যদি গুরুত্ব না পায় তাহলে আমরা মনে করি সমাধান আলোর মুখ দেখবে না। সে কারণে মনে করি, গুরুত্ব অনুধাবন প্রয়োজন। পাশাপাশি দক্ষ চালক তৈরি করা, যানবাহনের ফিটনেস পদ্ধতির আধুনিকায়ন এবং সমস্যা থেকে উত্তরণের একাগ্রতা প্রয়োজন। রাস্তাঘাট সংস্কারের বিষয়গুলোও একান্ত জরুরি। ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধ করা, সিটিং নৈরাজ্য বন্ধ করা উচিত। নাগরিক দুর্ভোগের বিষয়গুলো আমরা বিভিন্ন সময়ে বলে এসেছি। বিভিন্ন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সমাধানের। কিন্তু কিছুই হয়নি। নির্বাচনের পর আগামী দিনের সরকার গঠিত হলে সড়কের অব্যবস্থাপনা রোধে তারা কী করবেন বিষয়গুলো স্পষ্ট করা দরকার।

অনুমোদিত সড়ক পরিবহন আইনে জনসাধারণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়নি। এ আইনে দীর্ঘদিনের যাত্রী দুর্ভোগ, ভাড়া নৈরাজ্যের বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়নি। ভাড়া নির্ধারণে আগের মতোই পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আধিপত্য ও দৌরাত্ম্য বজায় রাখা হয়েছে। যাত্রী সাধারণের মানোন্নয়নে স্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। আগামী দিনে যারাই সরকারে আসুক, তাদের ইশতেহারে এসব বিষয় যদি অগ্রাধিকার পায় তাহলে জনগণের দুর্ভোগ কমতে পারে।

 

 
Electronic Paper