ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাজানোর পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এতে ভৌগলিক অবস্থা বিবেচনায় সাধারণ এলাকা, মেট্রোপলিটন এলাকা এবং উপকূলীয়, দুর্গম ও পার্বত্য এলাকার ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য পৃথক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ভোটকেন্দ্রের বাইরে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনা ও নৌ বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবেন। তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোটগণনা কক্ষে ঢুকতে পারবেন না। তবে রিটার্নিং বা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা চাইলেই কেবলমাত্র স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিমের সদস্যরা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করবেন।

এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আচরণ বিধি প্রতিপালনে দেড় হাজারের বেশি জুডিসিয়াল ও নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। সবমিলিয়ে ভোটের মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছয় লাখের বেশি সদস্য।

প্রসঙ্গত: আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মোট ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটার রয়েছেন।

সূত্র আরো জানায়, ভোটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে ১৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন সংস্থার প্রধান ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে কমিশন। ওই বৈঠকে বিভিন্ন গোয়েন্দাসংস্থা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিবেদন অনুযায়ী ভোটের নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। এরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারির মাধ্যেমে ভোটের আইনশৃঙ্খলা পরিকল্পনা জানিয়ে দেবে।

জানা যায়, সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আদলে এবারে নির্বাচনের ভোটের নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তবে সেনা ও অন্যান্য বাহিনী মোতায়েনের দিন সংখ্যার ক্ষেত্রে কিছুটা তারতম্য আনা হচ্ছে।

কারণ এবারের নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নেয়ায় ভোটগ্রহণ চরম প্রতিযোগিতামূলক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবার ভোট বর্জনে রাজনৈতিক কর্মসূচী না থাকায় সহিংসতার পরিমাণ কম হবে এমনটি ধরে নিয়েই নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ি, সেনা ও নৌ বাহিনীর সদস্যরা আগামী ২৪ ডিসেম্বর মাঠে নামবেন। ভোটের পরে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন। বিজিবি, কোস্টগার্ড, র‌্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান সদস্যরা স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টীম হিসেবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে পহেলা জানুয়ারি মাঠে থাকবেন।

ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রেগুলোতে পুলিশের সদস্য সংখ্যা দুইজন বাড়িয়ে ১৮ জন রাখা হবে। অপরদিকে মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে অবস্থিত ভোটকেন্দ্রগুলোতে একজন পুলিশ সদস্যসহ ১৪ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দুইজন পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন সদস্য রাখা হবে।

পার্বত্য এলাকা, দুর্গম ও দ্বীপাঞ্চল এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলোতে দুইজন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন ও ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশ সদস্য একজন বাড়িয়ে ১৬ জন মোতায়েন করা হবে।

জানা গেছে, বেসরকারি প্রশাসনকে সহায়তায় ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় সারাদেশে সেনাবাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হবে। তবে উপকূলবর্তী এলাকায় মোতায়েন থাকবেন নৌ-বাহিনীর সদস্যরা।

ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ি, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জেলা, উপজেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং সুবিধাজনক জায়গায় তারা অবস্থান করবেন। নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার সহায়তা কামনা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা প্রদান করবে। রিটার্নিং বা প্রিজাইডিং অফিসার না চাইলে তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোটগণনা কক্ষে যাবেন না।

প্রথমবারের মতো কেন্দ্রে থাকবে গ্রামপুলিশ
প্রথমবারের মতো নির্বাচনে গ্রামপুলিশ (দফাদার ও চৌকিদার) সদস্যদের নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের ৪৫ হাজার ইউনিয়ন পরিষদে ১০ জন করে মোট ৪৫ লাখ গ্রামপুলিশ সদস্য রয়েছেন। তাদের ভোটগ্রহণের আগের দিন ও ভোটের দিন কেন্দ্রের পাহারায় রাখা হবে।

 
Electronic Paper