সোহাগপুর বিধবাপল্লীতে পশু কোরবানির ব্যবস্থা করলেন ডিসি
এম. সুরুজ্জামান, নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
🕐 ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০২১
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত সোহাগপুর বিধবাপল্লীর বিধববাদের পবিত্র ঈদুল আজহায় গরু কোরবানি দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মোমিনুর রশীদ সোহাগপুরের বিধবাদের কোরবানির জন্য একটি গরু কিনে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) কোরবানীর গরুটি শহীদ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। কোরবানির গরু পেয়ে খুশি শহীদ পরিবারের বিধবা ও তাদের স্বজনরা।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) হেলেনা পরাভীন মঙ্গলবার বিকেলে জানান, সোহাগপুর বিধবাপল্লীতে শহীদ পরিবাবর্গের জন্য জেলা প্রশাসকের দেওয়া উপহার কোরবানীর গরু হস্তান্তর করা হয়েছে। এতে স্থানীয় সুধীমহল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
সোহাগপুর বিধবাপল্লী শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার এই ৫০ বছর পর সোহাগপুরের বিধবাপল্লীর বাসিন্দারা এবার নিজেদের করা কোরবানির মাংস খেতে পারবেন। এই আনন্দ বলে বোঝানো যাবে না। অনেকেই অনেকভাবে সহায়তা করেছেন, কিন্তু বর্তমান জেলা প্রশাসক এবারের ঈদে কোরবানির ব্যবস্থা করে দেওয়ায় তার প্রতি শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের অসীম কৃতজ্ঞতা। ৪৬ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানির গরুটি জেলা প্রশাসক কিনে দিয়েছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেরপুর নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামের বেনুপাড়া এলাকায় ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই পাকহানাদার বাহিনী নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ১৮৭ জন নিরীহ পুরুষ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। হানাদার বাহিনীর হাতে ধর্ষণের শিকার হন ১৪ জন নারী। এরপর থেকে সোহাগপুর গ্রামটি বিধবাপল্লী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। যুদ্ধের পর ৫৬ জন বিধবা বেঁচে ছিলেন। বর্তমানে বেঁচে আছেন ২৩ জন। সোহাগপুর গণহত্যায় নেতৃত্বদানের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আল-বদর কমান্ডার জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় হয়। সেই ফাঁসির রায় কার্যকরের পর ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ‘৭১ সোহাগপুর বিধবাপল্লীকে ‘সোহাগপুর বীরকন্যা পল্লী’ হিসেবে নাম ঘোষণা করেন।